আদালতপাড়ায় ভোটের উত্তাপ

64

জাতীয় নির্বাচনের পর চট্টগ্রামসহ দেশের স্থানীয় পর্যায়ের পেশাজীবী সংগঠনগুলোতেও ভোটের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে আইনজীবী সংগঠনগুলোতে এখন চলছে ভোটের যত হিসাব-নিকাশ। তারই ধারাবাহিকতায় আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ও প্রত্যাহার শেষে আজ রবিবার চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করার কথা রয়েছে। সবমিলিয়ে আদালতপাড়ায় এখন নিয়মিত কার্যক্রমের ব্যস্ততার পাশাপাশি ভোটের উত্তাপও অনুভূত হচ্ছে।
আইনজীবী সমিতি সূত্রে জানা গেছে, ঐতিহ্যবাহী ও মর্যাদাপূর্ণ সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ কিংবা ভাবধারায় বিশ্বাসী স্বতন্ত্র তিনটি প্যানেলের মনোনীত প্রার্থীরা প্রতিদ্বব্দ্বিতা করলেও গতবছর এর বাইরে ‘গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি’ নামে নতুন একটি প্যানেল থেকে গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি পদে প্রার্থী করা হয়। এবারের নির্বাচনেও গতবছরের মত চারটি আলাদা প্যানেল থেকেই গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে প্রার্থী করা হয়েছে। এরমধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের প্যানেল সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ ও বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীদের প্যানেল আইনজীবী ঐক্য পরিষদ গতবছরের মত নয়টি সম্পাদকীয় ও ১০টি নির্বাহী সদস্যপদের সবগুলোতে প্রার্থী নিয়েই প্রতিদ্ব›িদ্বতায় অবতীর্ণ হয়েছে। আর স্বতন্ত্র ও দলনিরপেক্ষ ধারায় বিশ্বাসী সমমনা আইনজীবী সংসদ থেকে সম্পাদকীয় পদে পাঁচজন এবং গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি থেকে ৪ জন প্রার্থী এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল নয়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। এবার মোট ভোটার সংখ্যা তিন হাজার তিনশ’ ৭৮ জন। গেলবারের নির্বাচনে তিন হাজার সাতশ’ ৩৭ জন ভোটারের মধ্যে মোট তিন হাজার ৮৫ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিলেন।
সাধারণ আইনজীবীরা বলছেন, নতুন প্যানেল মানেই প্রার্থী সংখ্যা বেড়ে যাওয়া। প্যানেলভিত্তিক ভোট ভাগ হলে নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে আগাম ধারণা দেয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায় নির্বাচন পর্যবেক্ষকসহ সাধারণ আইনজীবীদের কাছে। দলীয় পরিচয় ছাপিয়ে প্রার্থীর ব্যক্তিগত যোগাযোগও গ্রহযোগ্যতাসহ অন্যান্য বিষয়ও জয়-পরাজয় নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হবে বলে মত প্রকাশ করেন অনেকে।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটি সূত্র জানিয়েছে,এবারের নির্বাচনে সমন্বয় পরিষদ থেকে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন সৈয়দ মোক্তার আহমেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে তুষার কান্তি সিংহ হাজারি, সহ-সভাপতি পদে মোহাম্মদ রফিকুল আলম, সাধারণ সম্পাদক পদে আইয়ুব খান, সহ-সম্পাদক পদে মোহাম্মদ রাশেদ ফারুকী, অর্থ সম্পাদক পদে এস এম ওহিদুল্লাহ, লাইব্রেরি সম্পাদক পদে মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে রুবেল পাল, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে মোহাম্মদ হাসান মুরাদ। নির্বাহী সদস্য পদে যারা এ প্যানেল থেকে প্রার্থী হয়েছেন তারা হলেন, মোহাম্মদ আরিফ উদ্দিন চৌধুরী, মোহাম্মদ শফিউল আজম (বাবর), মোহাম্মদ শাহেদুল আলম সাইমন, মোহাম্মদ আফজাল হোসেন, মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, নাসরিন আক্তার চৌধুরী, পাইরিন আক্তার, রূপম রায় ও শাহাদাত হোসেন সিরাজী। ঐক্য পরিষদ থেকে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন এসএম বদরুল আনোয়ার, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে মোহাম্মদ ইসহাক, সহ-সভাপতি পদে মোহাম্মদ আজিজুল হক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক পদে মোহাম্মদ কাশেম চৌধুরী, সহ-সম্পাদক পদে মোহাম্মদ কবির হোসাইন, অর্থ সম্পাদক পদে রফিকুল আলম, লাইব্রেরি সম্পাদক পদে মোহাম্মদ আলী আকবর সানজিক, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে জেবুন নাহার লিনা এবং তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন আবু। এছাড়া নির্বাহী সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন, জয়নাল আবেদীন সম্রাট, মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন, মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন রুবেল, মোহাম্মদ রিয়াদ উদ্দিন, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, অলি আহমেদ ও শেখ তাপসি তহুরা।
অপরদিরকে, সমমনা আইনজীবী সংসদ থেকে সভাপতি পদে লড়ছেন সাবেক সভাপতি চন্দন দাশ, সাধারণ সম্পাদক পদে তৌহিদুল মুনির চৌধুরী টিপু, সহ-সম্পাদক পদে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক পদে হামিদ আলী চৌধুরী ও লাইব্রেরি সম্পাদক পদে ভাস্কর রায় চৌধুরী। আর গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি থেকে সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন জহির উদ্দিন মাহমুদ, সহ সম্পাদক পদে নারায়ন প্রসাদ বিশ্বাস, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মোহাম্মদ মনির হোসেন এবং তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক পদে আকবর মাহমুদ। এছাড়া, লাইব্রেরি সম্পাদক পদে মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ নামে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছেন।