আজারবাইজান-আর্মেনিয়া যুদ্ধ নিহত ২৩, আহত শতাধিক সংঘাত বন্ধে জাতিসংঘের আহ্বান

51

দুনিয়াজুড়ে বিদ্যমান করোনা মহামারির মধ্যেই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে দুই প্রতিবেশী দেশ আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে দীর্ঘ বিবাদের জেরে ২৭ সেপ্টেম্বর রবিবার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে দুই দেশ। আজারবাইজানের ভূখন্ড হলেও আর্মেনিয়া সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করে আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, রবিবারের সংঘাতে অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১৮ জন আর্মেনিয়ার নাগরিক। বাকি পাঁচ জন আজারবাইজানের নাগরিক বলে জানা গেছে। নিহতদের মধ্যে ১৬ আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীও রয়েছে বলে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
বাকি দুই জন বেসামরিক নাগরিক। বিচ্ছিন্নতাবাদী দলটির নেতারা জানিয়েছেন, প্রাণহানি ছাড়াও তাদের শতাধিক সদস্য আহত হয়েছে। আজারবাইজানে নিহত পাঁচ জনের সবাই একই পরিবারের সদস্য। আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গোলাবর্ষণে তারা নিহত হয়। আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দাবি, রবিবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১০ মিনিটের দিকে হামলা চালায় আজারবাইজান। এর জবাবে আর্মেনিয়ার বাহিনী প্রতিপক্ষের দুটি হেলিকপ্টার, তিনটি ড্রোন ভূপাতিত ও তিনটি ট্যাংক ধ্বংস করেছে। অন্যদিকে আজারবাইজান বলছে, হামলার শিকার হওয়ার পর তারা পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
১৯৮০-এর দশকের শেষদিকে কারাবাখ অঞ্চলে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মুহূর্তে সংঘর্ষ চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। ১৯৯৪ সালে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত এ সংঘর্ষে ৩০ হাজার মানুষ নিহত হয়। কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভেতরে হলেও ইয়েরেভান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করছে আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। মূলত এ নিয়েই সংঘাতের সূত্রপাত।
এদিকে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। রবিবারের সংঘর্ষে বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণহানির পর জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস এ আহŸান জানান।
মহাসচিবের মুখপাত্রের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। গুতেরেসের মুখপাত্র জানান, এ সংঘাতের ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিব মর্মাহত। শিগগিরই তিনি এ নিয়ে দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলবেন।