আগুন ঝরা ফাগুন

104

ভাষার মাসে গান কেবল গান নয়। একুশের চেতনায় উজ্জীবিত করে তোলার হাতিয়ার। ভাষার মাসে হাওয়ায় ভাসা একুশের গানে এখন ভাষাবন্দনা আর শহীদদের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার ছোঁয়া। এখন অনেকের গুন গুনানিতেও বাজে মাতৃভাষা কিংবা একুশের গান। তারা কেবল রাজপথে আলপনা আঁকে না, এখন মুখে, হাতে মাতৃভাষার শব্দের নানা বর্ণের নামাবলি আঁকে। এসব একুশের গানের উদাস করা সুরে ভেসে এগিয়ে চলেছে বাংলা ভাষা। দেশ থেকে দেশে, কাল থেকে কালে উজ্জীবিত করে মানুষকে।
এ মাস একুশের গানের মাস। শিল্পের বিভিন্ন শাখার মধ্যে একুশে ফেব্রূয়ারিকে নিয়ে কবিতা ও গানের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। অনেক গান ভাষা আন্দোলনসহ অন্যান্য আন্দোলন-সংগ্রামে অভূতপূর্ব প্রেরণা যুগিয়েছে। বলা যায় সংগ্রামী প্রেরণা সৃষ্টিতে গানগুলো প্রথম বীজ অঙ্কুরিত করে। সৃষ্টি করে আলাদা ব্যঞ্জনা। যা চেতনাকে মোহিত করে।
এসব গানের সামাজিক ভূমিকা
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও স্বতঃস্ফূর্ত আবেগ সঞ্চারী। সঙ্গীতের এই স্বতঃস্ফূর্ত ও সর্বজনীন আবেগ সৃষ্টিতে অনেকেই পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেন। যে গানগুলো আমাদের হৃদয়কে আলোড়িত এবং উদ্বেলিত করে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য আবদুল গাফফার চৌধুরী রচিত ও শহীদ আলতাফ মাহমুদ সুরারোপিত “আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রূয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি”। গাজীউল হক রচিত ও নিজামুল হক সুরারোপিত “ভুলবো না, ভুলবো না সে একুশে ফেব্রূয়ারি ভুলবো না”। মোশারফ হোসেনের লেখা ও আলতাফ মাহমুদ সুরারোপিত “মৃত্যুকে যারা তুচ্ছ করিল ভাষা বাঁচাবার তরে,”। আবদুল গাফফার চৌধুরীর লেখা এবং আলতাফ মাহমুদ সুরারোপিত “রক্তে আমার আবার প্রলয় দোলা ফাল্গুনে আজ চিত্ত আত্মভোলা”, আবদুল লতিফ রচিত ও সুরারোপিত “ওরা আমার মুখের কথা কাইড়া নিতে চায়”।
গানগুলো যুগ যুগ ধরে হৃদয় থেকে হৃদয়ে বয়ে নিয়ে যাচ্ছে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস। বাংলা ভাষীদের জুগিয়ে এসেছে এগিয়ে চলার প্রেরণা।