আগুনঝরা মার্চ

33

২৩ মার্চ, ১৯৭১। অগ্নিঝরা মার্চের এ দিনটি নানা কারণেই তাৎপর্যপূর্ণ। সারা বাংলায় এই দিনে প্রতিরোধ দিবস পালিত হয়। পাকিস্তানের প্রজাতন্ত্র দিবসে পাক পতাকা নয়, প্রেসিডেন্ট হাউস, বিদেশি দূতাবাসসহ বাংলাজুড়ে ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। প্রকাশ্য রাজপথে জয়বাংলা বাহিনী সামরিক কায়দায় মার্চপাস্ট করে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে বঙ্গবন্ধুর কাছে যায়। সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্রখচিত পতাকাটি তুলে দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধু নিজ হাতে তাঁর বাসভবনে স্বাধীন দেশের পতাকা উত্তোলন করেন।
জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা’ বাজানোর পাশাপাশি ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে চট্টগ্রামসহ পুরো দেশ প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। একাত্তরের এই দিনেই পূর্ববাংলার বাঙালিরা স্বাধীনতা ও স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়।
একাত্তরের এই দিনটি ছিল পাকিস্তান প্রজাতন্ত্র দিবস। ১৯৪০ সালে এদিনে শেরেবাংলা একে ফজলুল হক লাহোরে পাকিন্তান প্রস্তাব উত্থাপন করেন। ১৯৫৬ সালের ঠিক এদিনেই পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র রচনা হয়ে ছিল বলে তখন থেকে এদিনটি পাকিস্তান দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছিল। কিন্তু এই দিন পূর্ববাংলার চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।
পূর্ববাংলায় কোথাও পাকিস্তানের পতাকা ওড়েনি, প্রেসিডেন্ট হাউস থেকে শুরু করে সারাদেশের সর্বত্রই উড়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। স্বাধীনতার জন্য গর্জে ওঠে বাঙালি। চারদিকে গড়ে তোলে তীব্র প্রতিরোধ।