আকাশে উড়লো রং-বেরংয়ের ঘুড়ি

188

বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের আকাশে উড়লো রং-বেরংয়ের ঘুড়ি। মানুষ, জেলিফিশ, প্রজাপতি, ডরিমন, স্পাইডারম্যানসহ রঙিন সব ঘুড়ির ওড়াউড়িতে বর্ণিল হয়ে ওঠেছে সৈকতের আকাশ।
শুধু তাই নয়, দেশীয় ঐতিহ্যের আদি উপাদান ২৫ ফুট দীর্ঘ টেরাকোটা টেপা পুতুল, নৃত্যরত বিশাল হাওয়াই মানুষ, ভয়ঙ্কর ড্রাগন, আকর্ষণীয় চরকি, আলোকসজ্জিত ঘুড়ি, ফানুস, বাংলার বাঘ ছানার নৃত্য ও আতশবাজির চমকও ছিল সৈকতের বালুকাবেলা ও আকাশজুড়ে। আর বর্ণিল এ আয়োজন সাগর পাড়ে দাঁড়িয়ে উপভোগ করেন হাজারো পর্যটক ও দর্শনার্থীরা।
গতকাল শুক্রবার দুপুর থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী মন রাঙানো জাতীয় এই ঘুড়ি উৎসব। ‘চাই নির্মল সৈকত ও সাগরের কক্সবাজার’ এই প্রতিপাদ্যে আয়োজিত উৎসবটি প্রাণ ছুঁয়ে যায় পর্যটকসহ হাজারো দর্শনার্থীর। খবর বাংলানিউজের
বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশনের অয়োজনে শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে বাংলাদেশে জাতীয় পতাকার আদলে তৈরি ঘুড়ি উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ হাসান রাসেল। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চীনের রাষ্ট্রদূত মি. ঝাং ঝু, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন প্রমুখ।
এবারের ঘুড়ি উৎসবে প্রায় ১৫০ জন ঘুড়িয়াল অংশ নিচ্ছেন। ঘুড়ি উৎসবে মেতে উঠেছেন স্থানীয়সহ পর্যটকরাযুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ হাসান রাসেল বলেন, ঘুড়ি উড়ানো এমন একটি হৃদয়স্পর্শী খেলা যা আমার মনে হয় প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে এই খেলাটি মিশে আছে। কিন্তু বর্তমানে বাঙালির প্রাণের এই খেলাটি এখন হারাতে বসেছে। তাই গ্রাম বাংলার জনপ্রিয় এই খেলাকে বাঁচিয়ে রাখতে বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশন ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করছে। পাশাপাশি কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের বিকাশে সমুদ্র সৈকতে এ ধরনের আয়োজন বেশি বেশি করতে হবে।
এদিকে সামুদ্রিক প্রাণী, মানুষ, কার্টুন, প্রজাপতিসহ বিভিন্ন আদলে তৈরি দেশি-বিদেশি ঘুড়ি যেন দখল করে নেয় সৈকতের নীল আকাশ। বালুকাময় সৈকতের মাথার উপর শোঁ শোঁ করে উড়ছে লাল, নীল, বেগুনি, সাদা, রং-বেরংয়ের সব ঘুড়ি। পর্যটকদের কাছে অন্যরকম আবেশতো রয়েছেই, বিশেষ করে শিশুরা মেতে উঠে বর্ণিল আনন্দে।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মেহেদী হাসান জানান, কক্সবাজারে ঘুরতে এসেছি। সেই আনন্দের সঙ্গে ঘুড়ি উড়ানোর আনন্দও যোগ হলো।
পরিবার নিয়ে আসা পর্যটক সৌমেন বিশ্বাস বলেন, এতগুলো ঘুড়ি একসঙ্গে দেখে আর ঘুড়ি উড়াতে পেরে আমার বাচ্চা খুবই মজা পেয়েছে। এটাই আমার কাছে বড় আনন্দের। আমরা ঢাকা থেকে এখানে এসেছি। একসঙ্গে এতোগুলো ঘুড়ি এবং অনেক মানুষ একসঙ্গে ঘুড়ি উড়াচ্ছি সমুদ্র সৈকতে, আসলে অনেক মজা লাগছে। সমুদ্র এতো সুন্দর, আর এতোবড় জায়গায় আমরা ঘুড়ি উড়াচ্ছি সেই অনুভূতি সত্যিই অন্যরকম’, এভাবেই অনুভূতি ব্যক্ত করলেন ইসরাত নামের এই তরুণী।
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মৃধা বেনু জানান, ঘুড়ি একটি নির্মল এবং অনাবিল আনন্দের ক্রীড়ার নাম। এই অনাবিল আনন্দের মাধ্যমেই কিছু ভালো কথা আমরা সবাইকে বলতে চাই। তাই এবার আমরা বলেছি, ‘চাই নির্মল সৈকত এবং সাগরের কক্সবাজার’। ঘুরে ফিরে আমরা কক্সবাজারের পরিবেশের কথাই বলতে চেয়েছি। আমরা চাই, এই কক্সবাজারের পরিবেশ-প্রতিবেশ বেঁচে থাকুক অনন্তকাল।