আকাশেই মুক্তির খোঁজ

89

মেঘহীন নীলাকাশে ভিড় জমেছে পেটকাটি, চাঁদিয়ালের। হুল্লোড়হীন নিস্তব্ধতা চিরে ভেসে আসছে ‘ভোকাট্টা’। অলস সময়ে আকাশের কোনায় কোনায় ঘুড়ি কাটাকাটির লড়াই। দীর্ঘ ছুটির মন খারাপের এ সময়ে আকাশে ঘুড়ি উড়িয়েই যেন মুক্তির খোঁজ করছেন নগরবাসী।
সেই চলতি বছরের ২৬ মার্চ থেকে শুরু। এক-দুইদিন করে পেরিয়ে রোববার (১৭ মে) সাধারণ ছুটির ৫৩ তম দিন। সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, এ ছুটি চলবে আরও ১৩ দিন। অর্থাৎ ৩০ মে পর্যন্ত। আর শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের ছুটি তো শুরু হয়েছিলো আরও আগেই।
দীর্ঘ ছুটির ফাঁদে ঘরে ঘরে জমে উঠছে মন খারাপের গল্প। ঘরবন্দি জীবনে অখÐ অবসর। বিশেষ করে রোজার মাস চলায় এখন শুধুই অলস সময়।
এ সময়ে রং-বেরঙের ঘুড়ির ডানায় ক্লান্তি ভুলছে তিলোত্তমা ঢাকা। পেটিকাটি, চাঁদিয়াল, মোমবাতি বগ্গা কিংবা ময়ূরপঙ্খী, ডুগডুগি, শতরঞ্চ; আকাশজুড়ে ঘুড়ির ঝাঁক। সময় কাটাতে নাটাই-ঘুড়ি হাতে নেমে পড়েছে আট থেকে আশি, সব বয়সীরা। আর যারা ঘুড়ি উড়াতে পারেন না বা বেরসিক বাড়িওয়ালার কারণে ছাদে যেতে পারছেন না, ঘরের জানালায় কিংবা বারান্দায় ঘুড়ির ওড়াউড়ি দেখেও আনন্দ খুঁজে নিচ্ছেন।
গেন্ডারিয়ার বাসিন্দা সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র আলি আসিফ বললো, স্কুল বন্ধ। করোনার ভয়ে ঘর থেকে বের হই না। বিকেল হলে তাই ছাদে উঠে ঘুড়ি উড়াই। সারাদিন তাই বিকেলের অপেক্ষায় থাকি। ঘুড়ি উড়িয়ে ঘরে ফিরে ইফতার করি।
একই এলাকার তরুণ মীর মাসরুর জাহান বলেন, পুরান ঢাকার সাকরাইন তো ‘ওয়ার্ল্ড ফেমাস’! কিন্তু এবার এই লকডাউনের কারণে অসময়েই যেন সাকরাইন চলে আসছে। বিকেলে ছাদে ঘুড়ি উড়িয়ে সময়টা কাটাচ্ছি।
বাড়ির ছাদ থেকে ফাঁকা মাঠ। উড়ন্ত ঘুড়িতে আকাশের ক্যানভাসে নানা রঙ। কখনও মাঝ আকাশেই ভোকাট্টা। এসব মিলিয়ে অসময়ে চাঙ্গা ঘুড়ির বাজারও।
শাঁখারীবাজারের ঘুড়ি বিক্রেতা জয়দীপ বাড়ৈ বলেন, করোনার ছুটির পর থেকেই ঘুড়ির বিক্রি বেড়েছে। প্রতিদিন এক-দেড়শ ঘুড়ি বিক্রি হচ্ছে আমার দোকানে। তবে রমজান শুরুর পরে কিছুটা একটু কমেছিলো। এখন আবার বেড়ে গেছে।
শুধু রাজধানীই নয় সারাদেশেই এখন চলছে ঘুড়ি ওড়াউড়ির এ আয়োজন। যাতে শামিল হয়েছে ময়মনসিংহ জেলা ডিবি (গোয়েন্দা শাখা) পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আহমার উজ্জামানের পরিকল্পনায় শনিবার (১৬ মে) ত্রিশাল উপজেলায় দেড়শ শিশুর হাতে ঘুড়ি তুলে দেন এর সদস্যরা।
এ বিষয়ে জেলা ডিবি ওসি শাহ কামাল আকন্দ বাংলানিউজকে বলেন, শিশুরা ঘরে বসে থাকে। ওদের যেন সময় কাটে এজন্যই ঘুড়ি উপহার হিসেবে দেওয়া হলো। খবর বাংলানিউজের