আইনের শাসন সূচকে পিছিয়ে গেল বাংলাদেশ

18

আইনের শাসন সূচকে বাংলাদেশের অবনতি হয়েছে। বিশ্বের ১২৮টি দেশের মধ্যে এবার বাংলাদেশের অবস্থান ১১৫তম। গত বছর ১২৬টি দেশের মধ্যে আমাদের অবস্থান ছিল ১১২তম। ২০১৮ সালে ছিল ১০২ নম্বরে। দক্ষিণ এশিয়ার ছয়টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। এগিয়ে আছে নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভারত। পিছিয়ে আছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। এছাড়া নিম্নমধ্যম আয়ের ৩০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ২১ নম্বরে।
গতকাল বুধবার আইনের শাসন সূচক প্রতিবেদন-২০২০ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্য ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্ট (ডব্লিউজেপি)।
বাংলাদেশের আইনের শাসনের ক্ষেত্রে একমাত্র শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার দিক থেকে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা, দুর্নীতির অনুপস্থিতি, উন্মুক্ত সরকার, মৌলিক অধিকার, নিয়ন্ত্রণমূলক ক্ষমতার প্রয়োগ, নাগরিক ন্যায়বিচার এবং ফৌজদারি বিচারে বাংলাদেশের অবস্থার অবনতি হয়েছে। বাংলাদেশের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ মৌলিক অধিকারের দিক থেকে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ১২৮টি দেশের মধ্যে ১২২তম অবস্থানে রয়েছে। আর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে নিচে, অর্থাৎ ছয়টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের পরে রয়েছে তুরস্ক, ভেনেজুয়েলা, মোজাম্বিক, চীন, মিসর ও ইরান।
প্রতিবেদনে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে থাকা শীর্ষ তিন দেশ হচ্ছে ডেনমার্ক, নরওয়ে ও ফিনল্যান্ড। আর তলানিতে রয়েছে কঙ্গো, কম্বোডিয়া ও ভেনেজুয়েলা। আইনের শাসনের দিক থেকে গত এক বছরে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে ইথিওপিয়ার। দেশটির এ ক্ষেত্রে ৫ দশমিক ৬ ধাপ অগ্রগতি হয়েছে। আর সবচেয়ে বেশি অবনতি হয়েছে মিসরের, দেশটির সূচকে ৮ দশমিক ৫ নম্বর কমেছে। অবনতি হওয়া অন্য দেশ হচ্ছে ক্যামেরুন। দেশটির এ ক্ষেত্রে সূচক নম্বর কমে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ১২৮টি দেশের ১ লাখ ৩০ হাজার খানায় জরিপ ও চার হাজার আইনজীবীর মতামত নিয়ে ডব্লিউজেপি এই সূচক ও প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনার এক হাজার ব্যক্তির ওপরে তারা জরিপ করে। সংস্থাটির হয়ে বাংলাদেশে কাজ করে জরিপকারী সংস্থা ওআরজি কোয়েস্ট।
এ ব্যাপারে ডব্লিউজেপির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উইলিয়াম এইচ নিউকম বলেন, ‘আইনের শাসন শুধু বিচারক ও আইনজীবীদের বিষয় নয়; এটি জনগণের ন্যায়বিচার, শান্তি ও সমান সুযোগ পাওয়ার মূল ভিত। তাই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা আমাদের সবারই দায়িত্ব এবং এ ব্যাপারে সবারই ভূমিকা পালন করা উচিত।’