আইএসের শামীমার সন্তান ‘মারা গেছে’

42

আইএসে যোগ দেওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ স্কুলশিক্ষার্থী শামীমা বেগমের নবজাতক পুত্রসন্তান জেরাহ মারা গেছে বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবী। তবে তিনি শামীমার পুত্রসন্তানের মৃত্যুর খবর একেবারে নিশ্চিত নয় বলে দাবি করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর এ খবর জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, স্বতন্ত্রভাবে আইনজীবীদের এই দাবি যাচাই করে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
আইএস’র জিহাদি উন্মাদনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যুক্তরাজ্য থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় গিয়েছিল শামীমা। জঙ্গি বিয়ে করে জিহাদি সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য যে প্রচারণা চালিয়েছিল আইএস, শামীমা তারই বলি হয়েছিল। নেদারল্যান্ডস থেকে সিরিয়ায় যাওয়া এক জঙ্গিকে বিয়ে করেছিল শামীমা। দুইবার গর্ভপাতের শিকার হওয়ার পর সিরিয়ার শরণার্থী শিবিরে এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি। জিহাদিদের বিয়ে করে সন্তানদের যুদ্ধে পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল তাদের।
২০১৫ সালে আইএসে যোগ দিতে বাসা থেকে পালিয়ে সিরিয়া চলে যান শামীমা। সে সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। সিরিয়া গিয়ে তিনি আইএস জঙ্গি ইয়াগো রিডিজককে বিয়ে করেন। আইএসের তথাকথিত খিলাফত ভেঙে পড়লে শামীমা তার সন্তানসহ সিরিয়ার আল হোল শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেন। কিন্তু শিবিরে বসবাসরত অপরাপর জঙ্গি ও তাদের স্ত্রীদের হুমকিতে তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নাজুক হয়ে ওঠে। তার আইএসে যোগ দেওয়ার বর্ণনা প্রকাশ এবং যুক্তরাজ্যে ফিরতে চাওয়ার আকুতি শিবিরে বসবাসরত অন্যদের ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। তারা শামীমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে তাকে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
১৯ ফেব্রæয়ারি শামীমার নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত কার্যকর করে যুক্তরাজ্য সরকার। যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ দেশটির পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সামনে বলেছেন, শামীমাকে না হলেও তার সন্তান জেরাহকে যুক্তরাজ্যে আনা যেতে পারে। শামীমার নাগরিকত্ব বাতিল হলেও আইন অনুযায়ী তার সন্তান জেরাহ যুক্তরাজ্যের নাগরিক। শামীমাকে যুক্তরাজ্যের দূতাবাস আছে এমন স্থানে পৌঁছানো গেলে শামীমার অনুমতি সাপেক্ষে তার সন্তানকে যুক্তরাজ্যে ফিরতে দেওয়ার বিষয়টি ভেবে দেখা যেতে পারে।
গতকাল শুক্রবার শামীমার আইনজীবী মোহাম্মদ আকুঞ্জি জানান, আমাদের কাছে দৃঢ় কিন্তু অনিশ্চিত খবর আছে যে শামীমা বেগমের ছেলে মারা গেছে। সে ছিল একজন ব্রিটিশ নাগরিক।
১৭ ফেব্রæয়ারি শামীমার ছেলের জন্মের কথা জানানো হয়। পরে পুত্রসন্তানের নাম রাখা হয় জেরাহ। তিনি জানিয়েছেন, সিরিয়ায় শরণার্থী শিবিরে তাকে সংবাদমাধ্যম টাইমস শনাক্ত করার আগেই তার দুই নবজাতক সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।
জেরাহের জন্মের সময় আকুঞ্জি ঘোষণা করেন, শামীমা বেগমের পরিবারকে জানানো হয়েছে যে তিনি একটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তারা সুস্থ অবস্থায় আছে বলে আমাদের ধারণা।
বৃহস্পতিবার শামীমার বাবা আহমেদ আলী মেয়েকে সিরিয়া যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য যুক্তরাজ্য কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন। তিনি জানান, কিশোরী শামীমার বিদেশ গমনের পাসপোর্ট ছিল না। ব্রিটিশ অভিবাসন ব্যবস্থা বিশ্বের অন্যতম সেরা। আমি সব সময় বলি, কীভাবে শামীমা অন্যের পাসপোর্ট নিয়ে দেশ ত্যাগ করলো। তার এমনকি নিজের পাসপোর্ট নেই। এই ঘটনা তদন্ত হওয়া উচিত।
শাস্তি ভোগের জন্য তার মেয়েকে যুক্তরাজ্য ফিরে আসার অনুমতি দেওয়ার জন্য যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি ফের আহ্বান জানিয়েছেন আহমেদ আলী।