আইএসের ভিডিওতে শ্রীলঙ্কা হামলার ‘হোতা’ জাহরান

39

দেয়ালে টানানো ইসলামিক স্টেটের (আইএস) কালো পতাকা; সামনে দাঁড়িয়ে আটজন হাতে হাত রেখে আইএস নেতা আবু বকর আল-বাগদাদির নামে শপথ করছেন। এমন এক ভিডিও প্রকাশ করে আইএস দাবি করেছে, ভিডিও’র ওই ব্যক্তিরাই শ্রীলঙ্কায় হামলা চালিয়েছেন।
গত ২১ এপ্রিল ইস্টার সানডের দিন কয়েকটি গির্জা ও হোটেলে একযোগে চালানো ওই হামলায় নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যে সাড়ে তিনশ ছাড়িয়ে গেছে। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৩৯ জন বিদেশি নাগরিক বলে শ্রীলঙ্কা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গি দল আইএসের মুখপত্র ‘আমাক’ নিউজ এজেন্সিতে গত ২৩ এপ্রিল (মঙ্গলবার) হামলার দায় স্বীকার করে একটি বার্তা আসে। পরে ওই ভিডিও প্রকাশ করা হয়, যেখানে আটজনকে একসঙ্গে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা আনুগত্য স্বীকার করছি- সহজ হোক বা কঠিন, আমরা তার সব নির্দেশ মেনে চলব’।
ভিডিওতে আট জনের মধ্যে সাত জনের মুখ ছিল ঢাকা। যে ব্যক্তির মুখ খোলা ছিল তার নাম মোহাম্মদ জাহরান। তিনিই শ্রীলঙ্কায় হামলার হোতা বলে ধারণা দেশটির গোয়েন্দা সংস্থার।
ভিডিওতে জাহরান বাকিদের শপথ পড়াচ্ছিলেন। খবর বিডিনিউজের
হামলার পর শ্রীলঙ্কার টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী হরিণ ফার্নান্দো টুইটারে একটি চিঠি প্রকাশ করেন, যেটা সপ্তাহ দুই আগে শ্রীলঙ্কা পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) হাতে এসেছিল বিদেশি একটি গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে। ওই নথিতে বলা হয়, ন্যাশনাল তাওহীদ জামাত (এনটিজে) নামে একটি উগ্রপন্থি ইসলামী সংগঠন বিভিন্ন গির্জা ও ভারতীয় হাই কমিশনে হামলার পরিকল্পনা করছে। এনটিজের নেতা জাহরানের নামও ছিল সেখানে।
জাহরানের বিষয়ে সতর্ক করে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রীলঙ্কার পূর্বাঞ্চলে মুসলমান অধ্যুষিত কাথানকুডি শহরে তার ঘাঁটি। শ্রীলঙ্কার পূর্বাঞ্চলের বাসিন্দা তামিলভাষী জাহরান গত কয়েক বছর ধরে কট্টর শরিয়া আইনের প্রচার করে আসছিলেন; যে কারণে স্থানীয়রা তাকে ভালোভাবেই চেনেন বলে জানান দেশটির ধর্মীয় নেতারা।
শ্রীলঙ্কার তিনজন মুসলিম নেতা বলেছেন, তারা জাহরানকে নিয়ে গত তিন বছরে কয়েকবার প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
জাহরান ২০১৬ সাল থেকে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ধর্মীয় উসকানিমূলক বিভিন্ন ভিডিও পোস্ট করে আসছিলেন। ফেসবুকে তার দুইশর মতো অনুসারী আছে, যাদের কাছে তিনি রীতিমত তারকা। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ‘জাহরান মৌলভী’ নামের ওই একাউন্ট থেকে পোস্ট করা ভিডিওগুলো এখন মুছে দিয়েছে।