অভিযানে নিহতের সংখ্যা হিসাব করি না

30

ভারতের বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল বিএস ধানোয়া বলেছেন, কোনও সামরিক অভিযানে তারা হতাহতের কোনও হিসাব করেন না, তারা শুধু অভিযানের টার্গেট হিসাব করেন। পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখওয়াতে জয়েশ-ই-মোহাম্মদের ঘাঁটিতে ভারতীয় বিমান হামলায় হতাহতের সংখ্যা নিয়ে চলমান বিতর্কের প্রেক্ষিতে তিনি এই মন্তব্য করেছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এখবর জানিয়েছে।
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলায় ৪০ সিআরপি সদস্য নিহতের ১২ দিন পর ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী। সরকারি কর্মকর্তাদের ধারণা এই অভিযানে অন্তত ৩২৫ জয়েশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বেশির ভাগ নতুন সদস্য ও তাদের প্রশিক্ষক। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমে নিহতের সংখ্যা নিয়ে ভারতীয় দাবি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। এরপরই বিরোধীদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে নিহতের সংখ্যা জানানোর দাবি তোলা হয়। রবিবার ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি দলের প্রধান অমিত শাহ গুজরাতে দেওয়া ভাষণে দাবি করেন, হামলায় ২৫০ জয়েশ সদস্য নিহত হয়েছে। এতে করে ভারতে নিহতের সংখ্যা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়। সোমবার ২৬ ফেব্রুয়ারির অভিযান সম্পর্কে প্রথম মুখ খুলেন ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রধান। এয়ার চিফ মার্শাল বিএস ধানোয়া বলেন, নিহতের সংখ্যার বিষয়ে বিবৃতি দেবে সরকার। হামলা স্থলে কতজন মানুষ ছিল তা জানানোর কাজ নয় বিমান বাহিনীর। আমরা মানুষের হতাহতের বিষয় হিসাব করি না, আমরা হিসাব করি লক্ষ্যবস্তুতে কতটি আঘাত হানা গেছে আর কতটি যায়নি। কতজন মানুষ নিহত হয়েছে আমরা তা গুনতে পারি না। এটা নির্ভর করে হামলাস্থলে কতজন মানুষ ছিল।
ভারতীয় বিমানবাহিনী প্রধান বলেন, এটা নিশ্চিত যে অভিযানের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। আমরা যদি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাতের পরিকল্পনা করি, আমরা তা অবশ্যই করি। অন্যথায় কেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী প্রতিক্রিয়া দেখালেন। আমরা যদি জঙ্গলে বোমা নিক্ষেপ করে থাকি তাহলে তো তার প্রতিক্রিয়া দেখানোর কথা না।
উল্লেখ্য, পুলওয়ামা হামলার জেরে ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বিমানবাহিনী পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঢুকে বোমাবর্ষণ করে। পরদিন বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে নিজেদের সীমানায় দুটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত ও অভিনন্দন বর্তমান নামের এক পাইলটকে আটক করে পাকিস্তান। ’৭১ পরবর্তী সময়ে প্রথমবারের মতো পাল্টাপাল্টি বিমান হামলায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে শুরু করে। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা প্রশমনে সদিচ্ছার প্রতীক হিসেবে আটক অভিনন্দনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানান। শুক্রবার রাত নয়টার কিছু পরে ওই পাইলটকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর করে পাকিস্তান।