অফিসে যদি যেতেই হয়

64

করোনাভাইরাসের দিনগুলোতে অফিস করা মানে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়া। তবে সবার তো সেই সুযোগ নেই যে ঘরে থেকেই অফিসের কাজ করে যেতে পারবে সারাটা সময়। ৩১ মে থেকে সাধারণ ছুটি শিথিল করার পর এখন পর্যন্ত চালু হয়েছে অধিকাংশ অফিস। কতজন কর্মী অফিসে আসবেন তা নিয়ে যেমন বিধিনিষেধ আছে, তেমনি প্রতিষ্ঠানগুলোও নিশ্চয়ই চেষ্টা করছেন তাদের কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে। তবে সবকথার বড় কথা হলো নিজে কতটুকু সতর্ক থাকছেন। ঘর থেকে অফিস যাতায়াত তো আছেই, সঙ্গে কাজের প্রয়োজনে অফিসের বাইরে বিভিন্ন স্থানে যেতে হচ্ছে কর্মীদের, সবখানেই ঝুঁকি বিদ্যমান। এমতাবস্থায় নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে করণীয়গুলো কী সেগুলোই জানানো হলো স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের আলোকে।
ভ্রমণকালীন সতর্কতা: অফিসের ভেতরের পরিবেশ তুলনামূলক নিরাপদ হলেও ঘর থেকে অফিস যাওয়ার রাস্তাটুকু পাড়ি দেওয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ, বিশেষত, গণপরিবহনে। তবে অনেকেরই এছাড়া উপায় নেই। এমতাবস্থায় ভালোমানের মাস্ক ও গ্লাভস পরিধান করতে হবে, নেহাত নিরুপায় না হলে যানবাহনের ভেতরের কোনো কিছু স্পর্শ করবেন না। বাস, রিক্সা, লেগুনা ইত্যাদি ভাড়া নগদ দেওয়া ছাড়া উপায় নেই, তবে ‘রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম’গুলোর সেবা নিলে সেক্ষেত্রে ‘ডিজিটাল পেমেন্ট’ ব্যবহারের চেষ্টা করুন। যেসময় রাস্তায় ভীড় বেশি সেসময়ে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার সুযোগ থাকলে তা হাতছাড়া করবেন না। অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে নিতে পারেন সে ব্যাপারে।
সামাজিক দূরত্বে শিথিলতা নেই: সরকাল লকডাউন শিথিল করেছে, অফিস বিভিন্ন সুরক্ষা ব্যবস্থা দিয়েছে, আপনিও নিজেকে পরিচ্ছন্ন রাখছেন, তারপরও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা কমে না সামান্যতম। অফিস হয়ত কর্মীদের বসার স্থানে দূরত্ব রাখার ব্যবস্থা করেছে কিন্তু কাজের প্রয়োজনে পরস্পরের সঙ্গে আলাপ করতে গিয়ে যদি সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখেন তবে সবই পÐশ্রম। কাজ ছাড়াও নিজেদের মধ্যে গল্প করা, খাওয়া দাওয়ার সময় নিজ উদ্যোগেই দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সবসময় মুখে মাস্ক পরুন, কিছুক্ষণ পর পর সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন, হাতের কাছে ‘হ্যান্ড স্যানিটাইজার’ রাখুন। নিজে স্বাস্থ্যবিধি মানুন, আশপাশেও মানুষদেরও উৎসাহীত করুন।
করমর্দন নিষিদ্ধ: অফিসের রীতিনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই করমর্দন। স্বাভাবিক সময়ে দিনে যতবার কাজটি করতেন তার সিংহভাগই কিন্তু হত কর্মক্ষেত্রকে কেন্দ্র করেই। ফলে মনের অজান্তেই হাতটা বাড়িয়ে দেন প্রায় সকলেই। কারণ এমনটাই ছিল আমাদের সবার অভ্যাস। তবে এখন তা করা যাবে না, কেউ হাত বাড়িয়ে দিলে তাকে করোনাভাইরাসের কথা মনে করিয়ে দিন। আর কেউ আপনাকে মনে করিয়ে দিলে তা খারাপভাবে নেবেন না কিন্তু।
খাবার ভাগাভাগি ও বাইরে খাবারও নিষেধ: প্রায় সব অফিসেই দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় জমপেশ একটা আড্ডা হয়। ‘ভাবি কী দিয়েছে লাঞ্চে?’ এমন প্রশ্ন নিয়ে এগিয়ে আসেন বন্ধুসুলভ সহকর্মীরা। অনেকেই সহকর্মীদের সঙ্গে ভাগ করে খাওয়ার জন্য বিশেষ কোনো রান্নার পদ বেশি করে নিয়ে যেতেন। আবার ঘরের খাবার থাকলেও রেস্তোরাঁ থেকে প্রিয় কোনো পদ আনিয়ে নেওয়া হত। এসব ভাবলে অফিসকে হঠাৎ খুব আপন মনে হয় হয়ত অনেকেরই।
তবে সবই আপাতত বাদ দিতে হবে। ঘরের খাবার যতই ‘বোরিং’ হোক না কেনো সেটাই খেতে হবে। কারণ এখন ভয় শুধু ভুঁড়ি হওয়ার নয়, করোনাভাইরাসের, যা আপনিসহ পরিবার, সহকর্মী সবাইকে আক্রান্ত করতে পারে মাত্র কয়েকদিনেই। খাবার অন্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করাও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ যদি না সবাই ঠিক মতো হাত পরিষ্কার করে।