অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক স্ফুলিঙ্গের নাম শেখ হাসিনা বললেন তথ্যমন্ত্রী

36

শেখ হাসিনা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের এক স্ফুলিঙ্গের নাম বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে ‘শেখ হাসিনা : বাংলাদেশের স্বপ্নসারথি’ শিরোনামে আলোকচিত্র ও শিল্পকর্মের মাসব্যাপী প্রদর্শনী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয় তখন পাকিস্তানসহ অনেকেই সন্দিহান ছিল বাংলাদেশ টিকবে কি-না। আজকে সেই বাংলাদেশ সমস্ত সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে ভারত থেকেও এগিয়ে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ুও ভারত এবং পাকিস্তানের চেয়ে বেশি।
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের কথা উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছিল। যে চেতনার ভিত্তিতে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছিল, সে সমস্ত চেতনাকে নস্যাৎ করা হয়েছিল তখন। ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে সেদিন প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পদার্পণ ঘটেছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে শেখ হাসিনা তার নেতৃত্বের গুণাবলী দিয়ে বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বনেতার আসনে আসীন হয়েছেন। শেখ হাসিনা পৃথিবীর সবচেয়ে কর্মঠ প্রধানমন্ত্রীদের একজন। তিনি পৃথিবীর সৎ প্রধানমন্ত্রীদের একজন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তার নেতৃত্বে গত সাড়ে ১০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পৃথিবীর সব দেশকে ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশের গত বছরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ। খবর বাংলানিউজের
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের এই জনপদ পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে খাদ্যঘাটতির জনপদে রূপান্তরিত হয়। তখনকার পূর্ববাংলায় জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৪ কোটি ৭০ লাখ। বর্তমানে সেই বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি। পৃথিবীর সমস্ত দেশকে অবাক করে দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে খাদ্যে উদ্বৃত্ত দেশ হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে অনেক আগেই বাংলাদেশ একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরিত হতো।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিজয়কেতন উড়েছে। মিয়ানমার এবং ভারতের কাছ থেকে বিনা রক্তপাতে বাংলাদেশের সমপরিমাণ সমুদ্রসীমা আমরা আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে জয় করেছি। ১৯৪৭ সালের অমীমাংসিত সমস্যা ছিটমহলের কয়েক লাখ মানুষের কোনো আত্মপরিচয় ছিল না। ১৯৭৪ সালে যে চুক্তি হয়েছিল সেই চুক্তির আলোকে ছিটমহল বিনিময় চুক্তি সম্পাদন হয়েছে। বাংলাদেশের আয়তন বেড়ে গেছে ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর বিভিন্ন সময় হামলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দৃশ্যপট থেকে সরিয়ে দেওয়ার নানামুখী ষড়যন্ত্র বিদ্যমান রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছিল ষড়যন্ত্রকারীরা। শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও ষড়যন্ত্রকারীরা রাজনৈতিকভাবে না পেরে ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিচ্ছে। আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকার কোনো প্রয়োজন নেই, বরং বাংলাদেশের উন্নয়নে শেখ হাসিনার প্রয়োজন আছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব বদরুল আলম ভূঁইয়া।