অন্তত বিচার শেষ হয়েছে, সন্তুষ্টি এখানেই

38

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কয়েক দশক পরে হলেও চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভার আগে গুলি চালিয়ে হত্যাকান্ড এবং ঢাকার পল্টন ময়দানে সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলার বিচার যে শেষ করা গেছে, সেটাই ‘সন্তুষ্টি’। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে পাবনা আইনজীবী সমিতিতে বই কেনা বাবদ ৩০ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
তিন দশক আগে চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভার আগে গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার মামলায় সোমবার পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদÐ দিয়েছে আদালত।
এদিকে প্রায় দুই দশক আগে ঢাকার পল্টন ময়দানে সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলার ঘটনায় দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বিচার শেষে হরকাতুল জিহাদের (হুজি) ১০ জঙ্গির ফাঁসির রায় এসেছে।
এ দুই রায়ের বিষয়ে সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল দুটো রায় হয়েছে। দু’টি রায়ের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিকটা হচ্ছে চট্টগ্রামের ঘৃণিত অপরাধটা ১৯৮৮ সালে হয়েছে। ৩১ বছর পর এই বিচার সমাপ্ত হল। সিপিবির বোমা হামলা ২০০১ সালে হয়েছে। এর মানে ১৮ বছর পর আমরা এর বিচার শেষ করতে পেরেছি। সন্তুষ্টি প্রথমেই, যে অন্ততপক্ষে বিচারটি শেষ হয়েছে’।
আনিসুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেবল আইনের শাসনই প্রতিষ্ঠা করেননি, তা সুদৃঢ় করার জন্য যেসব পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, সেগুলোও নিয়েছেন। তারই একটি অংশ হলো দ্রæত এসব মামলার বিচার শেষ করা। আমরা এইটুকু বলতে পারি যে, এই দুটো বিচারের মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো, অপরাধীরা কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, যার যতই ক্ষমতা থাকুক না কেন। সাময়িকভাবে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কিছুদিনের জন্য হয়তো ‘আইনের ঊর্ধ্বে আছেন’ বলে একটা ইলুশনের মধ্যে থাকতে পারেন অপরাধীরা, শেষ পর্যন্ত তাদের আইনের আওতায় আসতেই হবে। খবর বিডিনিউজের
বিচার শেষে করতে দীর্ঘ সময় লাগল কেন জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সালে যখন মামলায় গতি আনার প্রক্রিয়া চলছিল, তা শেষ হওয়ার আগেই সরকার পরিবর্তন হয়। এই মামলাগুলো যাতে বিচারের মুখ না দেখে সেই ব্যবস্থা করেছিল বিএনপি সরকার। তারপর শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে সরকার গঠন করলেন, তখন থেকে এটা আবার তদন্তে। আবার নতুন করে সাক্ষীসাবুদ দেওয়ার ব্যবস্থা ও তদন্ত করে এইসব মামলাগুলো চালানো- সেজন্য একটু দেরি হয়েছে’।
রায় কবে নাগাদ কার্যকর হবে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আদালতের কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। এখানে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। এটা অটোমেটিক্যালি হাই কোর্ট বিভাগে কনফার্মেশনের জন্য যাবে। হাই কোর্ট বিভাগ শুনানি শেষ করলে তারপর রায় কার্যকর হবে’।
‘খালেদা জিয়াকে নিয়ে কেন ভাবতে হবে?’
খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে এক প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘একটি টেলিভিশনে আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আমরা (জামিন দেয়ার বিষয়ে) চিন্তা-ভাবনা করছি কিনা। আমরা কেন চিন্তা-ভাবনা করব? আমি চিন্তা-ভাবনার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। এখন তিনি সাজা ভোগ করছেন। আপিল বিভাগ তার জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন। সবই আদালতের ব্যাপার, আমাদেরকে কেন ভাবতে হবে যে আমরা খালেদা জিয়াকে নিয়ে কি করব?… আমরা অন্ততপক্ষে এটা নিয়ে এখন ভাবছি না’।