অনুভবে অনুধ্যানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

411

রবীন্দ্রনাথ বাঙালির অস্তিত্বের গভীরে সতত বিরাজমান। বাঙালি সত্তার অন্তর্গত চৈতন্যে,পালা-পার্বণে,সুখে-দুঃখে,আনন্দ-উল্লাসে-উৎসবে, অনুষ্ঠানে,প্রার্থনায়, পূজায় এমনকি আটপৌরে প্রাত্যহিকতার নানান অবয়বে রবীন্দ্রনাথ নান্দনিক সৃজনশৈলী দিয়ে সীমা ও অসীমের সেতু রচনা করেছেন। রবীন্দ্রনাথ অবলীলায় কালের মহাসড়ক বেয়ে কাল-অতিক্রম করছেন অসাধারণ নৈপুণ্যে।বিশ্বময় বাঙালির কবি হয়ে সকলের কবি হয়ে উঠেছেন। জীবনের পূর্ণতার অন্যতম অনুষঙ্গ হলো যুগপৎ সত্য, সৌন্দর্যে নন্দনতত্ত¡ অন্বেষা। রবীন্দ্রনাথই সাহিত্যে উচ্চমার্গীয় চেতনার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। তিনি জগতের আলোকিত অনুভব আর সৌন্দর্যের উদ্ভাসন নিয়ে রচনা করেছেন সাহিত্য। তাঁর সৃজনীশীল রচনা ও মননে ছিল সার্বজনীনতা । সংকীর্ণতার বেড়াজালে নিজেকে কখনো তিনি আবদ্ধ করেননি। তিনি সকল মানুষের কথা এবং সামগ্রিক সাম্যের বাণী প্রচার করতে চেয়েছেনপরম ঐকান্তিকতায়। বৈচিত্র্যময় রূপ রস দিয়ে শিল্পীজীবনে তিনি সৃজন করেছেন তাঁর সৃষ্টি রাশির অতল মহাসাগর। যিনি এক অমৃতের সন্তান। সংলগ্ন হয়ে আছেন শ্যামল বাংলার মৃত্তিকায়। রবীন্দ্রনাথ জীবনে বহুবার বিশ্বপথিক হয়ে দেশ দেশান্তর পরিভ্রমণ করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত স্বস্তি লাভ করেছেন বাংলার মাটির স্নেহের আঁচলে । তাই তো বলেছিলেন: মোর নাম -এই বলে খ্যাত হোক/ আমি তোমাদেরই লোক/ আর কিছু নয়/ এই হোক শেষ পরিচয়! বিশ্বনাগরিক রবীন্দ্রনাথ বাঙালি পরিচয়ে এভাবেই নিজের সত্তায় শান্তি ও স্বস্তি খোঁজেন। নিশ্চয়ই শ্যামল বাংলার মৃত্তিকার কাছে রবীন্দ্রনাথের ঋত আছে, কিন্তু এই মাটিও রবীন্দ্রনাথের কাছে অসামান্য ঋণে ঋতী।
বাঙালি জাতির রেনেসাঁর কেন্দ্রস্থলে রবীন্দ্রনাথের অবস্থান। রেনেসাঁস তাকে সৃষ্টি করেছিল এবং রেনেসাঁসের কর্মযজ্ঞে নিবেদিত ছিল তাঁর চিন্তা ও সৃষ্টিকর্ম। রবীন্দ্রনাথ আত্মপ্রকাশ করেছিলেন এমন একসময়ে, যখন বাঙালির চিন্তা, বাঙালির ভাষা, বাঙালির সাহিত্য এক বিরাট ঐতিহাসিক যুগের নিকটবর্তী হচ্ছিল। আরো ¯পষ্ট করে বললে বলতে হয়, বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগের মধ্যাহ্নকালে রবীন্দ্রনাথ সাহিত্য-সাধনা করেছিলেন। ঐতিহাসিক বাস্তবতা ও পরিবেশের দিক থেকে একটি সুদীর্ঘ ঐতিহাসিক যুগের মধ্যাহ্নকালের উত্তাপ ও দীপ্তি তিনি লাভ করেছিলেন। তাঁর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে সেই উত্তাপ ও দীপ্তি আরো বৃদ্ধি পেয়েছিল। যে পারিবারিক পরিবেশে তাঁর জন্ম ও জীবন, তার দুর্লভ ঐশ্বর্য ও অতুলনীয় আনুক‚ল্য অবশ্যই স্মরণীয়। রবীন্দ্রনাথের লেখনীতে বাংলা সাহিত্যের সব বিভাগ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। তাঁর কবিতা, গান আমাদের বাঙালি চেতনাকে সৌকর্যমÐিত করে সৃষ্টি করেছে অপরূপ এক মনোভ‚মি।
রবীন্দ্রনাথের মানস জুড়ে ছিল বাংলাদেশের প্রকৃতি, মাটি ও মানুষ। বাঙালির রাশি রাশি ভালবাসা, আতিথেয়তা তাঁকে মুগ্ধ করেছিল। বাংলার মাটির টানে বারবার ফিরে এসেছেন এই সবুজ শ্যামল বঙ্গপল্লীতে। জমিদারির কাজ-কর্ম দেখার জন্য আসেন পদ্মাপাড়ের শিলাইদহে। সেই সময়ে গ্রামকে আর গ্রামের মানুষকে একেবারে কাছে থেকে দেখার সুযোগ হয় তাঁর। বাংলার নিসর্গে তিনি এতই বিমোহিত হয়েছিলেন যে একথা তিনি তাঁর “ছিন্নপত্রে” অকপটে স্বীকার করে বলেছেন-“পৃথিবী যে কি আশ্চর্য সুন্দরী এবং কী প্রশান্ত প্রাণের এবং গম্ভীরভাবে পরিপূর্ণ-এইখানে না এলে মনে পড়ে না”। নিঝুম সন্ধা, নিস্তব্ধ পদ্মার জল, আবছায়া তীর, আকাশের প্রান্তে উত্থিত দীপ্তিমান সূর্য তাঁকে মুগ্ধ করেছিল।তিনি বাংলার মাটিতেই খুঁজে পেয়েছিলেন পূর্ব-পুরুষের সাংস্কৃতিক বোধ ও বিশ্বাস। তিনি তাঁর চৈতন্য জীবনদেবতায় সমর্পিত করতে চেয়েছেন, খুঁজে ফিরেছেন মানুষের মাঝে দেবতার অস্তিত্ব, সাধন-ভজন করেছেন মঙ্গলবোধের, তার দীপ জ্বালাতে চেয়েছেন অন্তর্লোকে। ধারণ করেছেন মহাকালকে। আবাহন করেছেন সময়ের অনাদি কালকে। এভাবেই ঘটেছে তার সৃজনশীলতার ব্যাপ্তি।রবীন্দ্রনাথের দেবার ক্ষমতা ছিল অমেয়।তাই তিনি তাঁর সাধনায় নিমগ্ন থেকেছেন ক্লান্তিহীন ভাবে। রবীন্দ্রনাথ আশি বছরের দীর্ঘ জীবনে বাহাত্তর বছর পর্যন্ত সৃজনী শক্তির পারঙ্গমতায় বাংলা সাহিত্যের শোভিত অঙ্গন ভরিয়ে দিয়েছেন তাঁর সোনালী শস্য কতায়। রবীন্দ্রনাথের মতো এতো বৈচিত্র্যআর নানামুখিতা পৃথিবীর কম শিল্পস্রষ্টার মধ্যেই আছে। বঙ্গজননী ধন্য , বাঙালি ধন্য রবীন্দ্রনাথের আবির্ভাবে। তাঁর মতো এমন একজন এ বঙ্গভ‚মিতে জন্মেছিল বলে বাংলা সাহিত্যের অঙ্গন পত্র পুষ্পে শোভিত হয়েছে। আমাদের অস্তিত্বে,আমাদের অনুভব অনুধ্যানে রবীন্দ্রনাথ নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের বাতাস এর মতো প্রাণদায়ী। আমাদের চিন্তাচেতনা, ভাবনা, ভাষা, সাহিত্য, শিল্প, সংগীত, রুচি সব কিছুর মধ্যেই আছে চিরকালীন রবীন্দ্রনাথ।
দেড়শো বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে ওআজো বাঙালির শিল্প-সাহিত্য-চেতনায় উজ্জ্বল নক্ষত্র রবীন্দ্রনাথ।
রবীন্দ্রনাথ বাংলাদেশ ও বাঙালির সঙ্গে একটা নিবিড় যোগসূত্র স্থাপন করে বাঙালির চিন্তা- চেতনাকে করেছেন দেশমুখিন । আবার বাংলাদেশের প্রকৃতি ও মানুষ রবীন্দ্রসাহিত্যের ভুবনকে স¤প্রসারিত করেছে- এ কথাও সমানভাবে সত্য। রবীন্দ্রনাথ শুধু কবি নন, তিনি বাংলাদেশের একান্ত স্বজন । ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রক্ত দিয়েছে বাঙালি। সেই ভাষাকে বিশ্বসভায়, বিশ্বভাষায় অসীম শক্তির ভাষা হিসেবে নতুন প্রাণ দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের গতিপ্রবাহ বিবেচনায় এ কথা স্বীকার্য যে, রবীন্দ্রনাথ না হলে বাংলা সাহিত্য ও ভাষা মধ্যযুগের দোরগোড়ায় আবদ্ধ থাকত। তাঁর শৈল্পিক রুচির একান্ত অনুভ‚তির রঙে-রেখায় এঁকেছেন নানা চিত্রকল্প । সেই চিত্রকল্পে বাঙালি খুঁজে নিয়েছে চিন্তা-চর্চার উর্বর পলি সমৃদ্ধ ভ‚মি, বিচরণের সুনীল আকাশ। রবীন্দ্রনাথের ভেতর দিয়েই বাঙালির পথ অন্বেষণ, সাহিত্যে নিরন্তর অবগাহন ।
রবীন্দ্রনাথ সত্য সুন্দরকে এত চমৎকারভাবে প্রকাশ করেছেন যে, তিনি নিজেই সত্য সুন্দরের কবি হয়ে উঠেছেন। বাঙালি হাজার বছর ধরেই সত্য সুন্দরের প্রতিষ্ঠায় ব্যাপৃত থেকেছে। তারই ধারাবাহিকতায় রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যকে নতুন ও চিরন্তন শিল্পের পথে ধাবিত করেন।
তাঁর লেখায় বাঙালির হাজার বছরের প্রেম, আবেগ ও সংগ্রামের শৈল্পিক উত্থান ঘটে। তাই বাঙালি সকল সংকটে হাত বাড়িয়েছে রবীন্দ্রনাথের কবিতা, গান ও চিন্তার ভুবনে। পাকিস্তানি অপশাসনের কাল পেরিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে রবীন্দ্রচর্চার প্রায় চার দশক চলেছে। রবীন্দ্রনাথ বর্তমানে আরো বেশি প্রাসঙ্গিক। ভবিষ্যতে ও রবীন্দ্রনাথ থাকবেন আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির প্রধান রূপকার হয়ে।
রবীন্দ্রনাথ সকল প্রকার অন্যায়, অসাম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ছিলেন, উদারনৈতিক চিন্তা-ভাবনায় প্রাগ্রসর ছিলেন তা সাধারণ মানুষের কাছে ¯পষ্টভাবে প্রতিভাত। আর এভাবেই বিতর্কের বেড়াজাল ভেদ করে পাকিস্তানের প্রায় পঁচিশ বছর রবীন্দ্র-বিরোধিতা সত্বে ও অসা¤প্রদায়িক মানবতাবাদী সংস্কৃতির ক্ষেত্র বিকাশে বাংলাদেশের এবং বাঙালির কবি রবীন্দ্রনাথ। বাঙালি সকল সংকটে নির্ভরতার ক্ষেত্র, সান্ত¡নার স্থল হিসেবের বীন্দ্রনাথকেই বেছে নিয়েছে। কারণ মহান মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে, মুক্তিযুদ্ধের উত্তাল সময়ে ও পরে রবীন্দ্রনাথ আমাদের শক্তির উৎস হয়ে আমাদের অনুভবে, চেতনায় এবং আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে আলোর ঝর্ণাধারায় প্রেরণা জুগিয়েছেন। বাঙালি জাতি আত্মশক্তির অন্বেষণে রবীন্দ্রনাথের কাছে আত্মজাগরণের দীক্ষা চেয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় রবীন্দ্রনাথের গান আমাদের জাগ্রত করেছে। প্রবল দেশপ্রেমে প্রলুব্ধ বাঙালি ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ এই গানে শিহরিত হয়েছে, বুক পেতে দিয়েছে মাতৃভ‚মি রক্ষার সংকল্পে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে, যেকোনো অধিকার আদায়ের আন্দোলনে, স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁর প্রভাব আমরা দেখেছি। তিনি নিজের কবিতা, গল্প, উপন্যাস, গান ও নাটকে বাঙালির প্রতিবাদী চেতনাকে শানিত করেছে, চিন্তাকে প্রসারিত করেছেন। এদেশের পালা, পাঁচালি, যাত্রা, আখ্যান, নৃত্য-গীতের ভেতরে বাঙালির শিল্পশক্তিকে অন্বেষণ করেছেন, প্রতিষ্ঠা দিয়েছেন। বাংলাদেশের বর্তমান ও আগামীকালের নিজস্ব শিল্পভাবনা বিনির্মাণে তিনি থাকবেন অক্লান্তপথিকৃৎ। রবীন্দ্রনাথ যে আত্মশক্তিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে বলেছিলেন- একদিন এই বাংলা থেকে, পূর্বদিক থেকেই আসবে মানুষের মুক্তির ডাক। তিনি যেন ঠিক টের পেয়েছিলেন, এই বঙ্গ থেকেই বাঙালির মুক্তির ডাক দেবেন কোনো এক মহান নেতা। সেই মহামানবের জয়গান গেয়েছেন, যাকে কবি দেখেননি। কবি যাঁর প্রতীক্ষায় রয়েছেন। তাঁর হাতে জাতির পরাধীনতার মুক্তি ঘটবে। তিনি যেন দেখেছিলেন পূর্বদেশে সেই নেতার আবির্ভাব ঘটবে। তিনি কি দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এনে দেবেন বাঙালির স্বাধীনতা? রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, অপেক্ষা করে থাকব, সভ্যতার দৈববাণী সে নিয়ে আসবে, মানুষের চরম আশ্বাসের কথা মানুষকে এসে শোনাবে এই পূর্বদিগন্ত থেকেই। কবি বেঁচে থাকলে দেখতেন তাঁর বাণীটি রূপ ধরে নেমে এসেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কণ্ঠে। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন : মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ, সে বিশ্বাস শেষ পর্যন্ত রক্ষা করব। আশা করব, মহাপ্রলয়ের পরে বৈরাগ্যের মেঘমুক্ত আকাশে ইতিহাসের একটি নির্মল আত্মপ্রকাশ হয়তো আরম্ভ হবে এই পূর্বাকাশের সূর্যোদয়ের দিগন্ত থেকে। রবীন্দ্রনাথ এই যে মানুষের শক্তিকে দেখেছেন, বিশ্বাস করেছেন, তাতেই তিনি তাঁর পূর্বকালের, সমকালের এবং ভাবিকালের আধুনিক মানুষ হয়ে থাকবেন। রবীন্দ্রনাথ এ জন্যই প্রাসঙ্গিক যে, তিনি বাঙালির এই শক্তিকে নতুন কালের প্রেক্ষাপটে ভেবেছিলেন।
রবীন্দ্রনাথ সৃজন মানসের ব্যাপকতায়, অফুরান সজীবতায় বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে ছড়িয়েছেন রবির আলো। তাই এতো বছর পরেও প্রতিমুহূর্তে প্রাসঙ্গিক রবীন্দ্রনাথ; শাণিত করে চলেছেন চেতনাকে, আলোকিত করছেন মননকে। ক্রমে ক্রমে রবীন্দ্র ভাবনা বাঙালির চিরন্তন পাথেয় হয়ে উঠছে। বাঙালির চিন্তায়, সত্তায় মিশে আছেন তিনি- একথা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। রবীন্দ্রনাথ শিল্প সংস্কৃতির চেতনায় সমৃদ্ধ হয়েই বহুমাত্রিক ছিলেন সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না এবং তা হাজার বছর ধরে বাঙালির হৃদয়ে বহমান থাকবে। রবীন্দ্রনাথের সকল কীর্তি সকল গৌরব সব আজ আমাদের। তাই প্রতিটা সাহিত্যপ্রেমী বাঙালি নিমগ্ন থাকতে চাই রবীন্দ্রনাথের সকল কীর্তির সাথে। বাঙালি এখনো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে গর্ব করে। এ ধারা চলবে বহুকাল। যেহেতু তিনি সমূহ সার্বিকতা নিয়ে আমাদের শ্রদ্ধার জায়গায় স্থান করে নিয়েছেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যে- কবিতা, গল্পে, গানে, উপন্যাসে, নাটকে, পত্রালাপে, প্রবন্ধে, মননশীল চিন্তা প্রকাশে সর্বত্রই- গতিমান যেধারা সৃষ্টি করেছেন,এখনো তাঁর জ্যোতির্ময়প্রভা আমাদের প্রতিদিনের শুদ্ধ চেতনায় আলো ফেলে ।
বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতে আজ রবীন্দ্রনাথ অবিচ্ছিন্ন এক সত্তা। আমাদের ভেতরে কল্যাণকর মহৎ চিন্তা জাগানিয়া কবি হিসেবে, চিন্তাবিদ হিসেবে রবীন্দ্রনাথ থাকবেনঅনন্তকাল । আমাদের প্রতিদিনের চিন্তায় চেতনায় ভাবনায় রবীন্দ্রনাথ সদা দোদীপ্যমান।আজ আবারো আকুল হৃদয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে মৃন্ময় জন্মের জন্য আবাহন জানাতে ইচ্ছা জাগে তাঁরই কবিতার ছন্দে – হে নূতন, দেখা দিক আর-বার জন্মের প্রথম শুভক্ষণ/তোমার প্রকাশ হোক কুহেলিকা করি উদঘাটন /সূর্যের মতন।/ রিক্ততার বক্ষ ভেদি আপনারে করো উন্মোচন। /ব্যক্ত হোক জীবনের জয়,/ ব্যক্ত হোক তোমামাঝে অসীমের চিরবিস্ময়। রবীন্দ্রনাথ নতুন আলোর প্রত্যয় নিয়ে পুনর্বার ফিরে আসুক আমাদের মাঝে, যার চিন্ময় জন্মের মাধ্যমে সৃষ্টি সৌন্দর্যের শৈল্পিক ইতিহাস রচিত হবে।