অনিয়মের খোঁজে গ্রাহকের ঘরে ঘরে তদন্ত টিম

37

গ্রাহক হয়রানির তথ্য নিতে মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম ওয়াসার তদন্ত কমিটি। গ্রাহকদের নানা সমস্যার কথা জানতে এলাকাভিত্তিক গ্রাহকদের ঘরে ঘরেও যাচ্ছেন কমিটির সদস্যরা। দ্রæত সময়ের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই মাঠে নেমেছে তদন্ত কমিটি।
এদিকে ওয়াসার সেবা প্রাপ্তিতে কোনো ধরনের সমস্যা বা প্রতিবন্ধকতা থাকলে তা জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে তদন্ত কমিটিকে।
গত ২৫ মে চট্টগ্রাম ওয়াসার বোর্ড সভায় পানির অপচয় (এনআরডবিøও) নিয়ে প্রশ্ন উঠে। প্রকৃত অপচয় গোপন করে ইচ্ছেকৃতভাবে অপচয় নির্ধারণ করা হচ্ছে এবং গ্রাহককে গড় বিল, মিটার ছাড়া সংযোগ ও অস্তিত্ববিহীন সংযোগের আড়ালে প্রকৃত অপচয় ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে বলে তথ্য আসে বোর্ড সভায়। তাছাড়া পাম্প অপারেটরদের অদক্ষতা, মিটার রিডিং না দেখেই বিল করা এবং গড় বিল ইত্যাদি কারণে প্রকৃত অপচয় ধামাচাপা থাকছে বলে বোর্ড সভায় জানানো হয়।
বিষয়টি আলোচনার পর তদন্ত করে দেখার সিদ্ধান্ত নেয় বোর্ড সভা। বোর্ড সদস্য ও ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের প্রতিনিধি জাফর আহমদ সাদেককে প্রধান করে গঠন করা হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। ওয়াসার ডিএমডি (ফাইনান্স) নুরুল আলম চৌধুরী ও প্রধান প্রকৌশলী ইয়াকুব সিরাজউদদোল্লাকেও কমিটির সদস্য করা হয়। প্রয়োজনে তদন্ত কমিটির সদস্য বাড়ানোর নির্দেশনাও দেওয়া হয়। তদন্ত প্রতিবেদন পরবর্তী বোর্ড সভায় উপস্থাপন করতে বলা হয়। কমিটি গঠনের কিছুদিন পর থেকেই তদন্তে নেমেছেন সদস্যরা।
ওয়াসা বোর্ডের সদস্য জাফর আহমদ সাদেক বলেন, আমাদের তদন্ত চলমান আছে। বিভিন্ন জায়গা গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। কোথায় কি সমস্যা আছে সেটা জানার চেষ্টা করছি। অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু লোকবল কম হওয়াতে আমরা কাজ সেভাবে এগিয়ে নিতে পারছি না। গণহারে তথ্য নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে আমরা চেষ্টা করছি, সময় বেশি লাগলেও যাতে একটি তথ্য সমৃদ্ধ প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে পারি।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেওয়া। এখন মানুষ তো যথাযথ সেবা পাচ্ছে না উল্টো ভোগান্তিতে পড়ছে। আমরা এ ধরনের ভোগান্তিগুলো তুলে আনতে চাই। পানি নিয়ে বা ওয়াসার অন্যান্য সমস্যাগুলো আমরা জানতে চাই সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। যে কোনো গ্রাহক আমার সাথে দেখা করে বা ফোনে বা ইমেইলে (০১৭১১৩৯০৯৬৪, ) তথ্য দিতে পারেন। আশা করবো সবাই তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবে।
মূলত ওয়াসা সামগ্রিক গ্রাহক হয়রানির তথ্য জানার জন্যই এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। রমজান ও ঈদের কারণে তদন্ত কমিটির কাজ শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব হয়। তবে বসে থাকেনি তদন্ত কমিটি। বারে বারে বসে তদন্ত কাজের চক এঁকেছেন। কিভাবে গ্রাহকদের হয়রানির তথ্য বের করবেন সেটা নিয়ে কয়েকটি মিটিং করেছেন। ঈদের ছুটির পরই নেমে পড়েছেন মাঠে। বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়েও চেষ্টা করছেন হয়রানির চিত্র তুলে আনতে। তাছাড়া তদন্ত কমিটির প্রধান ওয়াসা বোর্ডের সদস্য জাফর আহমদ সাদিকের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর, ই-মেইলেও তথ্য জানাতে অনুরোধ করেছেন। যদি কোনো গ্রাহক সরাসরি অভিযোগ জানাতে চান সেই সুযোগও রেখেছে তদন্ত কমিটি। তবে তথ্য ও প্রমাণ ভিত্তিক অভিযোগ নিয়ে গ্রাহকদের যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান জাফর আহমদ সাদেক।
ওয়াসার ডিএমডি (ফাইনান্স) নুরুল আলম চৌধুরী বলেন, তদন্ত কাজ চলছে। তিনি যেভাবে নির্দেশনা দিবেন আমরা সেভাবে কাজ করবো। অফিসিয়াল সবগুলো ডাটা আমাদের কাছে আছে। বাইরের যে তথ্যগুলো দরকার সেগুলো এলাকাভিত্তিক গিয়ে নিতে হবে। আমরা মিটিং করেছি, কিভাবে তদন্ত কাজ সহজে করা যায় সেই চেষ্টা করছি।