অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে রাঙামাটিতে অ্যাক্সক্লুসিভ ট্যুরিজম জোন

66

রাঙামাটিতে অ্যাক্সক্লুসিভ ট্যুরিজম জোন বা বিশেষ পর্যটন অঞ্চল গঠন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। গত তিন বছরেও প্রকল্প অনুমোদন পায়নি। ২০১৬ সালের প্রথম দিকে এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় সরকার। যেটির বাস্তবায়নে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় এরই মধ্যে ১২শ’ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। কিন্তু ২০১৭ সালের ২৯ মে সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রকল্পের প্রস্তাবনা পাঠানো হলেও এখনও তা অনুমোদন পায়নি। এতে রাঙামাটিতে বিশেষ পর্যটন অঞ্চল গঠনে যে মহাপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, তার বাস্তবায়ন নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। তবে প্রকল্পটি অনুমোদনের অপেক্ষায় মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাইয়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ বৃষ কেতু চাকমা জানান, সম্ভাবনায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলার পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশে অ্যাক্সক্লুসিভ পর্যটন জোন গঠনে একটি মাস্টার প্লান তৈরি করা হয়। এটির নক্শা ও খসড়াসহ পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ১২শ’ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে রাঙামাটি শহরের পলওয়েল স্পটে লাভপয়েন্ট স্থাপন দিয়ে অ্যাক্সক্লুসিভ ট্যুরিজম জোন স্থাপনার কার্যক্রম শুরু হয়। এর পরবর্তী বছরের শুরুর দিকে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বিভিন্ন মহলের পরামর্শ নেয়া হয়েছে। এ সেমিনারে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরাসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দফতর ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে গৃহীত প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত মতে, ২০১৭ সালের ২৯ মে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়। প্রকল্পটি বর্তমানে মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাই চলছে এবং যা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে শুনছি। প্রকল্পটির বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয়ে আবার সভার আহবান করা হবে বলে জানানো হয়েছে। সূত্রের জানা যায়, বিশেষ পর্যটন অঞ্চল গঠনে সদরসহ জেলায় ১০ পয়েন্টে পর্যটন স্থাপনা নির্মাণের জন্য নক্শাসহ মাস্টার প্লান তৈরি করা হয়েছে। যেটি বাস্তবায়নে ডিপিপি (প্রকল্প প্রস্তাবনা) অনুমোদনের জন্য ১২শ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাবনা দেয়া হয় সরকারকে। কিন্তু তা এখনও অনুমোদন হয়নি। সূত্রে আরো জানা যায়, রাঙামাটি শহরের ফিশারিঘাট থেকে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সংযোগ সড়কের দুই পাশে পর্যটকদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের গ্যালারি নির্মাণ, উভয় দিকের আশেপাশের দ্বীপগুলোকে সংযুক্ত করতে আধুনিক মানের ক্যাবল ব্রিজ নির্মাণ ও ক্যাবল কার সংযোগ স্থাপন, কাপ্তাই হ্রদের ভাসমান টিলাগুলোতে রেস্টুরেন্ট ও গেস্ট হাউস নির্মাণ, শহরের পর্যটন মোটেল এলাকায় আধুনিক মানের বিনোদন স্পট, সুইমিং পুল, ক্যাবল কার সংযোগ স্থাপন, প্যাডল বোট, ওয়াটার ট্যাক্সি চালু, শহরের জিরো পয়েন্টের লাভপয়েন্ট স্পট উন্নয়ন, লুসাই পাহাড়ে আবাসিক গেস্ট হাউস নির্মাণ, বালুখালী হর্টিকালচার এলাকায় কমিউনিটি সেন্টার ও ক্যাবল ব্রিজ নির্মাণ, শহীদ মিনার এলাকায় ৪০ কক্ষের একটি আবাসিক হোটেল নির্মাণ, সুবলং ঝরনা স্পট উন্নয়ন, নির্বাণপুর বৌদ্ধ বিহার স্পট উন্নয়ন, শহরের প্রবেশমুখ মানিকছড়ি এলাকায় পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, আসামবস্তী-কাপ্তাই সড়কে গ্যালারি স্টেট ভিউ সাইট, ঘাগড়ায় ক্যাফেটরিয়া এবং কাপ্তাই নতুনবাজার এলাকায় থ্রি স্টার হোটেল নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।