অনন্য উচ্চতায় জননেত্রী শেখ হাসিনা

48

ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু

শেখ হাসিনা, এটা শুধু একটি নাম নয়। এই নামের পেছনে লুকিয়ে আছে একটি বাংলাদেশ। আজকের এই আধুনিক সোনার বাংলার কারিগর বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা। যার ভরসায় এই দেশের মানুষ নতুনভাবে জীবন-যাপন করতে শিখেছে। এগিয়ে যেতে শিখেছে। আজ বাংলার মাটিতে অন্যায়, দুর্নীতি, অপরাজনীতি, গুম, খুন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি, মাদক, অপসংস্কৃতি, সামপ্রদায়িকতা এবং জঙ্গিবাদের কোনো প্রশ্রয় নেই। শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে মাদকবিরোধী অভিযান, দুর্নীতিবিরোধী অভিযান এসব কঠোরভাবে পরিচালিত হচ্ছে। তিনি অন্যায়কে কখনোই সমর্থন করেন না সেটার প্রমাণ প্রতিনিয়ত দিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি ক্যসিনো কান্ডোর নিজের দলের ভেতর যারা দুর্নীতি করতো তাদের সহ ছাড় দেননি। যা রাজনৈতিক নেতাদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত। ছাড় পাননি সাহেদ, পাপিয়া, সাবরিনার মতো বিভিন্ন দুর্নীতিবাজরা। সরকারের ছায়ায় বসে যারা অপকর্ম করছেন তাদেরকেই তিনি প্রথমে ধরছেন। যা প্রতিটি রাজনৈতিক দলের জন্য শিক্ষণীয় বিষয়। এই উপমহাদেশে এমন রাজনৈতিক নেতৃত্ব এর আগে কখনও কেউ দেখেনি। যিনি অপরাধী নিজের দলের হলেও তাকে কঠিন থেকে কঠিন শাস্তি দিতেও বিন্দুমাত্র চিন্তা করেন না।
আমরা সামপ্রতিক সময়ের বিষয়গুলোর দিকে তাকালেই অনেক কিছু জানতে পারি। বর্তমান সময়ের কঠিন পরিস্থিতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভ‚মিকা অপরিসীম। তিনি বয়স্ক ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, মাতৃত্ব ভাতা, বিধাব ভাতা, প্রতিবন্ধি ভাতা সহ আরও অনেক সহায়তা প্রদান করে চলেছেন দেশের অসচ্ছল জনগোষ্ঠীর জন্য। কিছুদিন আগে দেশের একজন প্রতিবন্ধি মেয়ে রায়ার আবেদনে সাড়া দিয়ে তার সাথে একজন প্রধান মন্ত্রীর ভিডিও কলে কথা বলা এটা পৃথিবীর ইতিহাসে খুবই বিরল এবং যাহা তার মমত্ববোধের বহিঃপ্রকাশ। মায়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীর বিষয় এবং করোনার কঠিন সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়টাও বিশ্ববাসির নজর কেড়েছে।
জননেত্রী শেখ হাসিনার এই সরকার দেশের উন্নয়নে কতটা ভূমিকা রেখেছে সেটা একজন সাধারণ মানুষও এখন বলতে পারবে। কাউকে এখন শিখিয়ে দিতে হবে না। চোখের সামনে যা-ই দেখা যায় সবই বর্তমান সরকারের অধীনেই বাস্তবায়ন হয়েছে। আজকের এই ডিজিটাল বাংলাদেশ, সকলের হাতে হাতে এন্ড্রোয়েড মোবাইল এসব কিছুই দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান। যা যে-কেউ স্বীকার করবে।
তাঁর সাহসিকতায় আজ বাংলাদেশ নিজ অর্থায়নে পদ্মাসেতু তৈরি করতে পারছে। তাঁর দৃঢ় মনোবল এবং অদম্য সাহস বাংলার মানুষকে সবসময় এগিয়ে নিয়ে যায়। তাঁর এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কারণে আজ বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের সম্মান এবং মর্যাদা আরও অধিক পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের পদ্মাসেতু আমরা নিজেরাই করছি নিজ খরচে। এরচেয়ে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে! এমন অনেক উন্নয়ন দেশরতœ শেখ হাসিনার হাত ধরেই হচ্ছে। চট্টগ্রামে স্বপ্নের টানেল এর চল্লিশ শতাংশ কাজ শেষ। এটাও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি অনন্য উপহার চট্টগ্রামবাসীর জন্য। এছাড়াও মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার, রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র সহ বিভিন্ন উন্নয়ন আমরা নিজেরাই দেখছি। একজন নারী নেত্রী হিসেবে বিশ্বের নারী নেত্রীদের কাছে তিনি আইডল। তার নেতৃত্ব গুণ দেশে-বিদেশে সকলকেই আকৃষ্ট করেছে। তিনি ফোর্বাসের তথ্যমতে বিশ্বের প্রভাবশালী নারীদের একজন। কর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ জননেত্রী শেখ হাসিনা বেশকিছু আন্তর্জাতিক সম্মাননা পেয়েছেন। দেশে এবং দেশের বাইরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনেক পুরস্কার রয়েছে। আর এসব পুরস্কার শেখ হাসিনাকে দেওয়া হয়েছে তাঁর যোগ্যতায়। সর্বমোট ৩৯ টি আন্তর্জাতিক পদক পেয়েছেন এ দেশরত্ন। অদূর ভবিষ্যতে তিনি আরও অনেক পুরস্কারে ভূষিত হবেন এটা আমার বিশ্বাস। বিশ্বাস করার কারণও আছে প্রচুর। যিনি সৎ এবং স্বচ্ছ তিনি এমন পুরস্কার হাজার হাজার পেতে পারেন। কারণ তাঁর কাজ তাকে তুলে ধরছে দেশের মানুষের কাছে, বিশ্বের কাছে। আজ গোটা দুনিয়ার কাছে তিনি একজন মহৎ নেতৃত্বের অনন্য উদাহরণ। অথচ আমরা রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে তার এই মহৎ কর্মের সাথেও দ্বিমত পোষন করি। যদি সত্য বলা যেতো, তাহলে পুরো বাংলাদেশের মানুষ একসুরে শেখ হাসিনাকে নিয়ে জয়ধ্বনি দিতো। বাংলাদেশ দল যখন ক্রিকেট খেলায় জিতে যায় এই মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী নিজে ফোন করে খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানায়, ভালোবাসা দেয়। যেকোনো খেলোয়াড়, লেখক, সাংবাদিক, গায়ক, শিল্পীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজের কাছের মানুষ মনে করেন। সবসময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন, বিপদে পাশে দাঁড়ান। অথচ আমরা কি এই মমতাময়ী মানুষটার সেসব সত্য কখনও তুলে ধরি ? সত্যি বলতে এসব আমরা কখনও বলি না। প্রবাদ আছে, মানুষ দাঁত থাকতে দাঁতের মূল্য বুঝে না। তাই বলতে চাই, জননেত্রী শেখ হাসিনা যে মহৎ নেতৃত্বেও এক উজ্জ্বল নক্ষত্র তা আমরা এখন যতটুকু না উপলব্ধি করতে পারছি তার অবর্তমানে পুরোটাই বুঝতে পারবো। কিন্তু আপনি শেখ হাসিনাকে ভালোবাসুন আর নাই বাসুন তিনি বাংলার মানুষকে আর এই সোনার বাংলাকে তাঁর বাবার মতো করেই ভালোবেসে যাবেন। ২৮ সেপ্টেম্বর এই প্রিয় নেত্রীর জন্মদিন। জন্মদিনে প্রিয় নেত্রীর প্রতি রইলো অপার ভালোবাসা, শ্রদ্ধাবোধ ও কৃতজ্ঞতা। সৃষ্টিকর্তার কাছে তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করি। কারণ আমাদের মনে রাখতে হবে শেখ হাসিনা ভালো থাকলে ভালো থাকবে বাংলাদেশ।
লেখক: সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগ
সাবেক প্যনেল মেয়র, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন