অদ্ভুত প্রজাতির প্রাণীর সন্ধান যা ভাবতেই পারেনি কেউ

36

পানি ছাড়াই চারদিন দিব্যি ডাঙ্গায় হেঁটে বেড়ায় মাছ, স¤প্রতি এমনই অনেক অদ্ভুত প্রাণীর দেখা মিলেছে ওয়ার্ল্ডওয়াইড ফান্ড ফর নেচার’, সংক্ষেপে ডব্লিউ ডব্লিউ এফদের সন্ধানে। পরিবেশগত কারণে বিপন্ন প্রজাতির সন্ধানে ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ভুটান, উত্তর-পূর্ব ভারত, নেপাল, উত্তর মায়ানমার, দক্ষিণ তিব্বতসব জায়গা থেকে এসব প্রাণীবিজ্ঞানীদের গত কয়েক বছরের পরিবেশ জরিপের একটা রিপোর্ট এত দিনে প্রকাশ করেছে তারা।
সমীক্ষা শেষে জানালেন এমন সব প্রজাতির কথা, যা মানুষ কল্পনাও করে উঠতে পারে না।
তার মধ্যে প্রথমেই নিঃসন্দেহে সেরার শিরোপা দাবি করবে পৃথিবীর বুকে হেঁটে-চলে বেড়ানো এই মাছ! বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, হালকা নীল-রঙা এই মাছের মাথাটা অনেকটা সাপের মতো। তারা সরাসরি বাতাস থেকে অক্সিজেন নিতে পারে। তবে, বরাবরের জন্য নয়। সেই জন্যই জল ছেড়ে স্থলে এলে মেরে-কেটে বেঁচে থাকতে পারে দিন চারেক! বাতাসে নিশ্বাস নেওয়ার সঙ্গে মাটিতে হাঁটতেও পারে এই প্রজাতির মাছ। ভেজা কাদা মাটি পেলে হড়কাতে হড়কাতে প্রায় ৪০০ মিটার পর্যন্ত সুন্দর হেঁটে দেখিয়ে দেবে তারা!
এই অত্যাশ্চর্য মাছ ছেড়ে দিলে আরও যা পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, তার তালিকাও কম বিস্ময়কর নয়। লাল, হলুদ আর কমলা রঙের মিশেলে এক ধরনের বিষাক্ত সাপ খুঁজে পেয়েছেন তারা, যাকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখলে ঠিক একটা গয়না বলে মনে হবে! খুঁজে পেয়েছেন এমন মাছও, যার শ্বদন্ত (কুকুরের দাঁতের মতো তীক্ষ দাঁত) আছে! পেয়েছেন উজ্জ্বল নীল চোখের ব্যাঙ, সারা গায়ে বুটিওলা ছোট্ট লাল পাখি।
আর বিশেষ ভাবে উল্লেখ করার মধ্যে আছে উত্তর মায়ানমার থেকে খুঁজে পাওয়া সাদা-কালো এক শ্রেণির উন্নাসিক বাঁদর! এদের সবারই নাক উপরের দিকে গোটানো। ফলে, বৃষ্টি পড়লেই নাকে জল ঢুকে গিয়ে এক নাগাড়ে হাঁচতে থাকতে তারা। হেনস্থার হাত থেকে বাঁচতে তাই বৃষ্টি পড়লে হাঁটুর মধ্যে মুখ গুঁজে বসে থাকে বেচারারা!
ডবিøউ ডবিøউ এফ জানাচ্ছে, সমীক্ষায় সব মিলিয়ে ১৩৩ রকম নতুন উদ্ভিদ, ২৬ রকমের নতুন প্রজাতির মাছ, ১০ রকমের উভচর, ৩৯ রকমের জলজ জীব খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। সেই তুলনায় পাখি, সরীসৃপ আর স্তন্যপায়ী জীবের সংখ্যা বেশ হতাশ করার মতো তিন শ্রেণিতেই সাকুল্যে একটি করে নতুন প্রজাতি খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।
সেই জন্য বিশ্ব জুড়ে সতর্কবার্তাও জারি করেছে ডব্লিউ ডব্লিউ এফ। এখনই যদি এদের রক্ষার জন্য ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে সমূহ বিপদ! উষ্ণায়ণ, নগরায়ন, চোরাপাচার ইত্যাদির কারণে আর কিছু দিন পরে হয়তো বিপন্ন এই প্রজাতিরা একেবারেই মুছে যাবে পৃথিবীর বুক থেকে।