অদম্য গতিতে জয়রথ ছুটে চলেছে আবাহনীর

43

ইস্ যদি প্রথম তিন খেলায় পরাজিত না হতো তাহলে চট্টগ্রাম আবাহনীকে কে পায়? সিজেকেএস ইস্পাহানী প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে গতকাল নবম রাউন্ডের খেলায়ও জয় পেয়েছে তারা। সাগরিকা জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গতকালের খেলায় ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবকে তিন উইকেটে হারিয়েছে চট্টগ্রাম আবাহনী। প্রথম তিন খেলায় টানা হারের পর এটা দলটির টানা ষষ্ঠ জয়, যার রেকর্ড চলমান লিগে অন্য কোনো দলের নেই। জানা গেছে, প্রথম তিন খেলা চলাকালীন চট্টগ্রাম আবাহনীর ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান, চট্টগ্রামের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী ফোর এইচ গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গওহর জামিল সিরাজ ব্যবসায়িক কাজে দেশের বাইরে ছিলেন। চতুর্থ খেলায় আগে তিনি দেশে এসেই দলের হাল ধরেন। যার কারণে পরের ম্যাচ থেকে চট্টগ্রাম আবাহনীর জয়ের রথ শুধু ছুটছেই। সমান সংখ্যক খেলায় ব্রাদার্সের এটি পঞ্চম পরাজয়।
দিনের অন্য খেলায় মুক্তিযোদ্ধা লাল দলকে ছয় উইকেটে হারিয়ে নিজেদের সপ্তম জয় তুলে নেয় পাইরেটস অব চিটাগাং। তাদের হার দুটি চট্টগ্রাম আবাহনী ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ক্রীড়া সমিতির বিপক্ষে। সমান সংখ্যক খেলায় মুক্তিযোদ্ধা লালের এটি ষষ্ঠ পরাজয়। তাদের তিন জয় ছিল ইস্পাহানী এসসি, এফএমসি স্পোর্টস ও শতদল ক্লাবের বিপক্ষে।
চট্টগ্রাম আবাহনী ও চট্টগ্রাম ব্রাদার্সের মধ্যকার খেলায় টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ব্রাদার্স ৪৪.২ ওভারে ২১২ রান সংগ্রহ করতেই সবকটি উইকেট হারায়। ব্রাদার্স ষষ্ঠ উইকেটে সোহরাওয়ার্দী শুভ ও ধীমান ঘোষের পার্টনারশিপ থেকে পায় ৮৪ রান পায়। এছাড়া উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে তাদের ৪৩ রান। ব্যক্তিগতভাবে সর্বোচ্চ ৪৮ রান করেন ধীমান ঘোষ। অন্যদের মধ্যে সোহরাওয়ার্দী শুভ তোলেন ৪৫ এবং ৩২ রান করেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ফারদিন খান। চট্টগ্রাম আবাহনীর পক্ষে আবুবক্কর চারটি, সাজ্জাদ হোসেন তিনটি, অধিনায়ক কাজী কামরুল ইসলাম দুটি এবং শামসুদ্দিন বাপ্পা একটি উইকেট পায়।
২১৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে চট্টগ্রাম আবাহনী ৫০ রানে গুরুত্বপূর্ণ চার উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে। এরপর পঞ্চম উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয়ের দিশা খুঁজে পায় গওহর জামিল সিরাজের দল চট্টগ্রাম আবাহনী। ১৫৪ রানের এজুটি বিচ্ছিন্ন হয় জয় থেকে মাত্র ১৩ রান দূরে ২০৪ রানে। মাত্র তিন রানের জন্য সেঞ্চুরিবঞ্চিত আবাহনী নির্ভরযোগ্য ব্যাটম্যান সাব্বির হোসেন ব্যক্তিগত ৯৭ রানের রানআউটটের শিকার হয়ে ফিরে গেলে পরপর আরো দুটি অর্থাৎ ২০৪ রানেই টপাটপ তিনটি উইকেট তুলে নিয়ে ফের কাপন ধরানোর চেষ্টা চালায় ব্রাদার্স। তবে অভিজ্ঞ অধিনায়ক কাজী কামরুল ইসলামের ব্যাটিং দৃঢ়তায় তা ব্যর্থ করে ১২ বল ও তিন উইকেট হাতে রেখে ৪৮ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে চট্টগ্রাম আবাহনী। অধিনায়ক কাজী কামরুল ইসলাম ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন। ব্রাদার্সের পক্ষে এএসএম নকিব তিনটি সোহরাওয়ার্দি শুভ দুটি এবং ওমর ফারুক একটি উইকেট নেন।
পাইরেটস অব চিটাগাং ও মুক্তিযোদ্ধা লাল দলের মধ্যকার খেলায় টস হেরে আগে ব্যাট করার আমন্ত্রণ পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা তানভিরের ৫০ সালাউদ্দিন জুয়েলের ৪৪, মোহাম্মদ রোকনের ২৪ ও অতিরিক্ত ৪০ রানের কল্যাণে নির্ধারিত ৫০ ওভারে আট উইকেট হারিয়ে ২০৭ রান তোলে। পাইরেটসের রেজাউল করিম ও ওয়াহিদুল আলম দুটি করে এবং অংশুমান, আশরাফুল ও খোরশেদ প্রত্যেকে একটি করে উইকেট নেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ৩৭ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে জয় পায় পাইরেটস অব চিটাগাং। দলের হয়ে পেয়ার মোহাম্ম সৌরভ ৬২, আরমান উল্লাহ সর্বোচ্চ ৭৪, ইনজামামুল হক ১৭, ইমামুল মুসতাকিন ২৮ এবং আশরাফুল আলম ১৮ রান করেন। মুক্তিযোদ্ধা লালের পক্ষে ফয়জুল্লাহ সুমন, রাকিব, জাফর, জাহেদুল ও মামুন প্রত্যেকে একটি করে উইকেট নেন।
আজকের খেলা- শহীদ শাহজাহান সংঘ ও রাইজিং স্টার (জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়াম) এবং ইস্পাহানী এসসি ও শতদল ক্লাব (এমএ আজিজ স্টেডিয়াম)।