অতিরিক্ত মানসিক চাপ কমাতে পারে আয়ু

12

যারা অতিরিক্ত মানসিক চাপে ভুগছেন তাদেরকে সাবধান করছেন বিশেষজ্ঞরা। যে গবেষণার ভিত্তিতে এই হুঁশিয়ারি- তা প্রকাশিত হয়েছে ‘বিজেএম ওপেন’ নামক জার্নালে। ২৫ থেকে ৭৪ বছর বয়সি নারী-পরুষের অংশগ্রহণে হওয়া ‘ফিনিশ ন্যাশনাল ফিনরিস্ক স্টাডি ১৯৮৭-২০০৭’ নামক গবেষণা থেকে সংগ্রহ করা তথ্যের ভিত্তিতে নতুন এই গবেষণা করা হয়। তার মৃত্যুর হার বিবেচনাধীন ছিল ২০১৪ সাল পর্যন্ত।
গবেষণার প্রধান পর্যবেক্ষণের বিষয় ছিল দৈনন্দিন জীবনাযাত্রার বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ দিক এবং তার সঙ্গে নারী-পুরুষের মৃত্যুর হারের সম্পর্ক।
ফিনল্যান্ডের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেল্থ অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার’র গবেষক টমি হার্কানেন বলেন, ‘আগে মানুষের আয়ু হিসাব করা হতো বিভিন্ন ‘সোসিওডেমোগ্রাফিক ব্যাকগ্রাউন্ড ফ্যাক্টর গ্রূপ’র ওপর ভিত্তি করে। যেমন- বয়স, লিঙ্গ, শিক্ষাগত যোগ্যতা ইত্যাদি। আমরা কাজ করতে চেয়েছিলাম অন্য দিকগুলো নিয়ে এবং জানতে চেষ্টা করেছি আয়ুর ওপর তার প্রভাব সম্পর্কে’।
আয়ু কমে যাওয়া জন্য বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ দিকের মাত্রা পরিবর্তন করে একাধিকবার মানুষের আয়ু হিসেব করেন গবেষকরা। প্রতিবার একটি ঝুঁকিপূর্ণ দিকের মাত্রাই পরিবর্তন করা হয়। আর বাকিগুলোর মাত্রা স্থির রাখা হয়। ‘বডি ম্যাস ইনডেক্স, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রাই শুধু পরিবর্তন করেছেন গবেষকরা, তবে জীবনযাত্রা অন্যান্য সকল দিক ছিল স্থির।
ফলাফলে দেখা যায়, একজন ৩০ বছর বয়সি মানুষের আয়ু সবচাইতে বেশি কমায় ধূমপান আর ডায়াবেটিস। ধূমপান জীবন থেকে কেড়ে নেয় ৬.৬ বছর আর ডায়াবেটিস ৬.৫ বছর। আর অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকার কারণে জীবন থেকে কমে যেতে পারে ২.৮ বছর। এছাড়াও শরীরচর্চার অভাব আয়ু কমিয়ে দেয় প্রায় ২.৪ বছর। অপরদিকে প্রচুর পরিমাণে ফল ও সবজি খাওয়ার কারণে আয়ুতে যোগ হয় যথাক্রমে ১.৪ বছর আর ০.৯ বছর। নারী-পুরুষের আয়ুর উপর এই বিষয়গুলোর প্রভাব রয়েছে, তবে সমান নয়।
৩০ বছর বয়সী নারীর ক্ষেত্রে ধূমপান কেড়ে নেয় ৫.৫ বছর, ডায়াবেটিস ৫.৩ বছর, মানসিক চাপ ২.৩ বছর। প্রবীণদের ক্ষেত্রে বিষয়গুলোর প্রভাব একই রকম। তবে বছরের সংখ্যাগুলো আরও কম।
গবেষকরা বলেন, ‘লক্ষ্য করার ব্যাপার হলো একই ঝুঁকির কারণে নারী ও পুরুষের আয়ুর ওপর পড়া ক্ষতিকর প্রভাবের মাত্রার তারতম্য কম, মাত্র ১.৬ বছর। এই তারতম্য নিয়ন্ত্রণ হয় পরিবর্তনযোগ্য ক্ষতিকর অভ্যাসগুলোর মাধ্যমে। তাই যে বিষয়গুলো আয়ু কমাচ্ছে যেমন- ধূমপান, মদ্যপান, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চার অভাব, সেগুলোই জনসাধারণে মাঝে হরহামেশাই দেখা যায়। বিশেষ করে যাদের আর্থসামাজিক অবস্থান নিচে’। খবর বিডিনিউজের