‘অকূল পাথারে’ হারিয়ে গেলেন হুইপ

40

দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে পুরো টিমসহ হারিয়ে গেলেন পটিয়া আসনের এমপি ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। গতকাল রবিবার দুপুর ২ টা থেকে তিনি একটি ইঞ্জিন চালিত সম্পানযোগে বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে যান।
এ সময় সাম্পান নিয়ে বিকাল ৪টায় দিক হারিয়ে ফেলেন হুইপের সাথে থাকা দলটি। ওই সময় সাম্পানের ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যায়। বিকালে অঝোরে বৃষ্টি পড়ে। তাতে সকলে ভিজে যান। পরে বাঁশ দিয়ে বৈঠা বানিয়ে এদিক-ওদিক ঘুরে ফিরে পথ খুঁজে পান তারা। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে তিনি সঙ্গীসহ ভাটিখাইন ইউনিয়নের করল হয়ে গন্তব্যে পৌঁছেন। এর আগে ও পরে দুর্গত এলাকার আশিয়া, বাথুয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় লোকজনের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন হুইপ।
হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর একান্ত সহকারী হাবিবুল হক চৌধুরী জানান, দুপুর ২ টার দিকে সাম্পানে করে দুর্গত এলাকা পরিদর্শন শুরু করেন তিনি। এ সময় দুর্গতদের মাঝে নগদ টাকা বিতরণ করেন এবং তাদের খোঁজ-খবর নেন। বিকাল ৪টার দিকে জনবসতিহীন একটি বিলের অথৈ জলে দিক হারিয়ে ফেলেন। ওই সময় সাম্পানের ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। বিকল্প হিসেবে ওই দলে থাকা লোকজন বাঁশ কেটে সাম্পানের বৈঠা বানান। কিন্তু দিক খুজে না পাওয়ায় প্রায় ৩ ঘণ্টা এদিক-ওদিক ঘুরতে থাকেন। ওই সময় বৃষ্টির শুরু হলে সাম্পানে থাকা সকলে ভিজতে থাকেন। চারদিকে পানির কারণে দিক খুঁজে পেতে সাধারণ লোকজনের সহায়তাও পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে সন্ধ্যার দিকে দিক খুঁজে পেলে তারা ফিরে আসেন।
আশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ হাসেম জানান, হুইপের হারিয়ে যাওয়া দলের সাথে ছিলেন পটিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, আশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ হাসেম, আশিয়া ইউনিয়ন আ. লীগ সভাপতি গোলাফুর রহমান মঞ্জু চৌধুরী, আয়ুব আলী, আ. লীগ নেতা মোহাম্মদ বখতেয়ার উদ্দিন, এফ কবির চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নজরুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি বেলাল উদ্দিন, যুবলীগ নেতা মঈনুল হক রাশেদ, জাহাঙ্গীর আলম, ইউপি মেম্বার শরাফত আলী, নুরুল আবছার চৌধুরী, ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ার আরাফাত রনি, মোহাম্মদ গালিব চৌধুরী ও আবদুল্লাহ আল নোমান প্রমুখ।
হুইপ সামশুল হক চৌধুরী জানান, দুর্গত এলাকা পরির্দশনের সময় পুরো টিম দিক হারিয়ে ফেলেন। সব স্থানে পানির কারণে সাধারণ মানুষের সহায়তা এবং বিকল্প হিসেবে কোন সাম্পানও পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে বিকল্প ব্যবস্থায় তীরে ফেরেন।
তিনি বলেন, দুর্গত এলাকায় যেসব ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেসব ঘর তৈরি করে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে রাস্তাঘাট, ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ ও ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দ্রæত মেরামত করা প্রয়োজন। কাজ দ্রæত করতে এলজিইডি, সড়ক বিভাগ, পানি উন্নিয়ন বোর্ড এবং শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীদের সাথে গতকাল রাতে বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠকে এসব বিষয়ে দ্রæত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।