অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি পূরণের আহব্বান যুক্তরাষ্ট্রের

43

অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে বাংলাদেশ সরকারকে আহব্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একে বাংলাদেশি জনগণের আকাক্সক্ষার প্রতিফলন বলে উল্লেখ করেছেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন মুখ্য উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলিস ওয়েলস। নির্বাচনি প্রচারণার সময় দলমত নির্বিশেষে সবাইকে শান্তিপূর্ণ ও দায়িত্বশীল আচরণের আহব্বান জানিয়েছেন তিনি। নির্বাচনে পর্যবেক্ষক দলকে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
এদিকে, বাংলাদেশে অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের আহব্বান জানিয়ে বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদেও একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে।
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সাক্ষাৎকারটি দিয়েছেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন মুখ্য উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলিস ওয়েলস। নির্বাচনি প্রচারণার শুরুতেই সংঘটিত সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ জানান তিনি।
এলিস ওয়েলস বলেন, ‘সহিংসতার কারণে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয় এবং যারা গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ণ করতে চায়, তারাই এক্ষেত্রে লাভবান হয়।’
নির্বাচনি প্রচারণা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় পুরোপুরিভাবে অংশগ্রহণের জন্য সব দলকে স্বাধীন ও নিরাপদ বোধ করতে হবে। তাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের স্বাধীনতা, দেশজুড়ে প্রচারণা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশ আয়োজনের সুযোগ দিতে হবে। বহু ও প্রাণবন্ত বিতর্ক থেকেই উদ্ভূত হয় শক্তিশালী গণতন্ত্র।’
নির্বাচন আয়োজন প্রসঙ্গে ওয়েলস বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকারকে উদ্বুদ্ধ করছে-যা বাংলাদেশের জনগণের আকাক্সক্ষারই প্রতিফলন।’
ওয়েলস জানান, বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে সুনির্দিষ্ট করে কোনও প্রার্থী বা দলকে সমর্থন করে না যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রশাসন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও জনগণের মূল্যবোধে বিশ্বাসী। নির্বাচনে পর্যবেক্ষক দলকে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করছে উল্লেখ করে তিনি জানান, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কাজ করা মার্কিন সংগঠন (এনডিআই)-এর ৫ সদস্যের দলকে এ খাতে তহবিল দেওয়া হচ্ছে। এ মাসের শুরুতে একটি প্রাক-মূল্যায়ন মিশন সম্পন্ন করেছে এনডিআই। এনডিআই’র সহযোগী ‘দ্য এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস’ বাংলাদেশের নির্বাচনে দুজন আন্তর্জাতিক নির্বাচনি বিশ্লেষক মোতায়েন করছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকও পাঠাবে তারা।
শীর্ষ এ মার্কিন কূটনীতিক বলেন, ‘দেশজুড়ে আলাদা আলাদা নির্বাচনি পর্যবেক্ষক দল মোতায়েন করবে মার্কিন দূতাবাস। যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ডের পাশাপাশি আমরাও ‘বাংলাদেশের ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ’-এ স্থানীয়ভাবে ১৫ হাজার পর্যবেক্ষক মোতায়েন করছি।’
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষ-প্রতিনিধি পরিষদে বাংলাদেশের নির্বাচন সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে। বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য তৎপরতা চালাতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি চাওয়া হয়েছে। কংগ্রেস সদস্য টেড ইয়োহো, এলিয়ট এনজেল, ব্র্যাড শেরমান, স্টিভ শাবট, জেরাল্ড কনোলি ও ড্যারেন সোটোর উদ্যোগে প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়েছে। মত প্রকাশ ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে বাংলাদেশ সরকারকে আহব্বান জানানো হয়েছে ওই প্রস্তাবে। পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনে করা অনুরোধে সাড়া দেওয়া এবং নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার আহব্বান জানানো হয়েছে।
নির্বাচনে ভোটারদের ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে এবং সব বাংলাদেশি ভোটারের বাধাহীন অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল ও বিচারিক কর্তৃপক্ষের প্রতি আহব্বান জানানো হয়েছে প্রস্তাবে।